মিঠাপুকুরে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি; টাকা না দিলে প্রত্যয়নপত্র গায়েব

মিঠাপুকুরে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি; টাকা না দিলে প্রত্যয়নপত্র গায়েব

মিঠাপুকুরে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি; টাকা না দিলে প্রত্যয়নপত্র গায়েব

সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি প্রকল্প চালু করা হয়। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মিঠাপুকুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে প্রকল্পে সর্বনিম্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস সনদধারীরা প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। প্রকল্পে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। প্রশিক্ষণের শুরুতেই নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও অদৃশ্য কারণে তা চাপা পড়ে যায়।

স¤প্রতি উপজেলার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক নজরুল ইসলামের কাছে অনেকেই জিম্মি হয়ে পড়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারের ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থীরা তার কাছে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগীরা জানান, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই ওই কর্মচারী তাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। যে কোন কাজে অফিসে গেলেই অফিস সহায়ক নজরুলকে টাকা দিতে হয়। কেউ তার কথার বাইরে কাজ করলেই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। যুবরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য তাদের প্রত্যয়নপত্র জমা দিলেও অদৃশ্য কারণে তা হারিয়ে যায়।

এছাড়াও ভুয়া এনআইডি, সার্টিফিকেট ও ঠিকানা পরিবর্তন করে অনেকেই এই প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর এসব কাজে সহায়তা করে এ পর্যন্ত কয়েকলাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অফিস সহায়ক নজরুল ইসলাম।

এর আগে অফিস সহায়ক নজরুলকে প্রশিক্ষণার্থীদের ক্লাস নিতে দেখা যায়। উপজেলার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ও ব্যাংকে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের কর্মী রয়েছে। এসব দপ্তরে ফাঁকফোকড় পিরিয়ে অবৈধভাবে সুবিধা নেয়া যুবদের সহযোগিতা করে আসছেন অফিস সহায়ক নজরুল। বিনিময়ে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। যা ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের কর্মীদের এনআইডি ও সার্টিফিকেট যাছাই-বাছাই করলেই দিবালোকের মতো স্পষ্ট হবে।

সম্প্রতি সেই অফিস সহায়কসহ ওই দপ্তরের কয়েকজনের বিরুদ্ধে নানা অজুহাতে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। টাকা না দিলে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রত্যয়নপত্র আটকে দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অনেকে টাকা না দেয়ার কারণে তাদের প্রত্যয়নপত্র ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। এর ফলে ভুক্তভোগীদের মোবাইলে এসএমএস আসলেও তাদের টাকা দিচ্ছেন না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এভাবে একের পর এক অনিয়ম করে আসলেও জড়িতরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।

ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির অনিয়মের বিষয়ে জানার জন্য উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ মুঠেফোনে জানান, আমি করোনা পজেটিভ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছি। অফিসে আসলে ভুক্তভোগীদের সমস্যা সমাধান করা হবে। আর অফিস সহায়ক নজরুল কোন অনিয়ম করে থাকলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন ভূইয়া বলেন, ন্যাশনাল সার্ভিস প্রকল্পের বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন

Explore More Districts