মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি। কৈশোরকাল থেকেই এ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি হওয়াটা জরুরি | KishoreganjBarta

মাসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি। কৈশোরকাল থেকেই এ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টি হওয়াটা জরুরি | KishoreganjBarta

কৈশোরকাল ভয়ভীতিহীন আনন্দে চলার বয়স। কিন্তু এ সময়েই কিশোরীরা কতগুলো রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হন। কিছু ট্যাবু ও কুসংস্কার তাঁদের এ সময়টাকে বিষাদময় করে তোলে। বয়ঃসন্ধিকালে পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের মাঝে শারীরিক, মানসিক ও আচরণগত কিছু স্বাভাবিক পরিবর্তন আসে; যা সমাজের মানুষের কাছে অস্বাভাবিক ঠেকে।

দেশের একটি বড় অংশ কিশোরীদের এ সময়কে বুঝতে বা জানতে চেষ্টা করে না। আর এখান থেকেই একজন নারীর জীবনে শুরু হয় ভয়ের সংস্কৃতি।

বয়ঃসন্ধিকালে একজন কিশোরী জীবনের প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা লাভ করেন। সাধারণত ১১-১৪ বছর বয়সের যে কোনো সময় একজন কিশোরীর
মাসিক বা ঋতুস্রাব হতে পারে, যা প্রায় ৪৯ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। কিন্তু আমাদের সমাজে মাসিক নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয় না, মাসিককে লজ্জার বিষয় হিসেবে ধরা হয় এবং শিক্ষিত সমাজের অনেকেও পিরিয়ডসংক্রান্ত আলোচনা এড়িয়ে যান। ফলে একজন কিশোরী হঠাৎ করেই যখন জামা-কাপড়ে রক্তের উপস্থিতি দেখেন, তখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, নিজেকে গুটিয়ে নেন। হাস্যোজ্বল মেয়েটি রাতারাতি হয়ে যান গৃহবন্দি। পরিবার বা প্রতিষ্ঠান যেহেতু এ বিষয়ে তাঁকে কোনো শিক্ষা দেয়নি, তাই এমন পরিস্থিতিতে তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। কার কাছে কী বলবেন, কীভাবে বলবেন– তা বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে মাসিকের সময় কীভাবে নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, ব্যবহার্য উপকরণ ও খাদ্যতালিকা কী হবে– এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে তিনি থাকেন একেবারেই অজ্ঞ।

ইয়ুথ প্ল্যানেটের  সমীক্ষায় দেখা যায় বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের প্রায় ৯৮ শতাংশ পরিবারের অভিভাবকরা সন্তানদের সঙ্গে মাসিক নিয়ে কোনো উন্মুক্ত আলোচনা করেন না।  প্রায় ২০০০ নারী ও কিশোরীর ওপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, মাত্র ১০-১২ শতাংশ মাসিকের সময় স্যানিটারি প্যাড বা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কাপড় ব্যবহার করেন। বেশিরভাগ নারীরা পুরোনো কাপড় ব্যবহার করেন কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই। এমনকি অধিকাংশ নারীদের মাঝে মাসিক নিয়ে রয়েছে বিস্তর কুসংস্কার।

এই সব নারীদের পিরিয়ড কালীন স্বাস্থ্যসেবা  নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ইয়ুথ প্ল্যানেট। গ্রামীণ নারীদের সঙ্গে মাসিককালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনার উদ্যোগ।
নিজের প্যাড নিজে বানানোর কৌশিল কিশোরী ও গ্রামীন নারীদের শিখানো হচ্ছে। পিছিয়ে পরা নারীদের এবং বিভিন্ন স্কুল   কলেজে ফ্রি প্যাড বিতরন সহো নানা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

সংগঠন টি ২০২২ সালে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পায়।

২৮ শে মে বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা দিবস উপলক্ষে  ইয়ুথ প্ল্যানেট  আয়োজন করে  র‍্যালী ও আলোচনা সভা যার মাধ্যমে উন্মুক্ত আলোচনার নতুন ধাপ খোলার আশা করছে সংগঠনটি।

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ-৯, নান্দাইল আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন।

সংগঠনটির কো- অর্ডিনেটর এ বি এম মাহমদুল হাসান শিবলি বলেন আমরা চাই সবাই কথা বলুক, জানুক পিরিয়ড নিয়ে। এআ ট্যাবু দূর হোক সুস্থ থাকুক আমাদের মা বোনরা।

কিশোরগঞ্জ বার্তা/ এস এম রিফাত

Explore More Districts