খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার সাধু পাড়া গ্রামের পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর পরিচালিত উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেডের সরকারী বাগানের গাছ কেটে চুরি কবে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির পাঠোয়ারী ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন (বাবলু) বিরুদ্ধে।
গুইমারা উপজেলার সাধু পাড়া গ্রামের পল্লী উন্নয়ন বোর্ড এর পরিচালিত বৃক্ষ বাগানে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে। বাগান থেকে পৌণে দুই’শ গাছ কেটে বিক্রি করা হলেও বিআরডিবি’র স্থানীয় কর্মকর্তারা গাছের সংখ্যা কমিয়ে গাছ চুরির দায়ে অভিযুক্ত উপজেলা সমবায় সমিতির সভাপতি বাবলুকে পার পাইয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় সমবায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৬ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর চেয়ারম্যান নগেন্দ্র নারায়ণ ত্রিপুরা মিলে তৎকালীন মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাধু পাড়া এলাকায় ১০ একর জায়গা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর নামে বন্দোবস্তী নেন এবং বাগান সৃজন করেন। তখন থেকে সমিতির সদস্যরা মিলে বাগানের পরিচর্চা করে আসছেন। বাগানে সেগুন, গর্জন, চম্পা, চাপালিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ছিলো। সম্প্রতি বাগান পরিস্কার করার নামে নাম ডালপালা ছাটাই করতে গিয়ে বাগানে ১ শত ৯২ টি বড় বড় গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বাবলুর বিরুদ্ধে।
বাগানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানে প্রায় বড় বড় গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় সমবায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তিনি নিজ হাতে আশির দশকে এই বাগানে গাছ লাগিয়েছিলেন। টানা দশ বছর বাগানের দায়িত্বে ছিলেন। এতো বছর লালিত স্বপ্নের এই বাগানের অংশীজন শত শত সমবায়ী আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু সভাপতি বাবলূ রক্ষক হয়ে ভক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই বিষয়ে আরও
বাইল্যাছড়ি মৌজার হেডম্যান ত্রিদিব নারায়ন ত্রিপুরা জানান, তাঁর প্রয়াত বাবা তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান নগেন্দ্র নারায়ণ ত্রিপুরা একজন সমবায় সংগঠক হিশেবে নিজ উদ্যোগে ভূমি নির্ধারণ করে প্রশাসনের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। এখন সেই বাগানের চল্লিশ বছর বয়সী গাছগুলো যদি কেটে নেয়া হয়; এটা তো গুরুতর অপরাধ। তিনি গাছ চুরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানান।
সমিতির সদস্যরা জানান মাটিরাঙ্গা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন (বাবলু) মিলে এ কাজ করেছেন। তবে আবার গাছ কাটা নিয়ে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী মুঠোফোনে জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া তিনি কথা বলতে পারবেন না।
আর উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ এর চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বাবলু ফোনে জানান, একটি ঘটনা ঘটে গেছে,এটি সমঝোতার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজীব কর জানান,মাটিরাঙ্গা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন পাটোয়ারী উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লি:-এর সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি বাগানের গাছ কেটে বিক্রি করার অপরাধে একটি জিডি করেছেন। আমরা সরেজমিনে ঘটনাস্থল থেকে অনেকগুলো কাটা গাছ আলামত হিশেবে জব্দ করেছি। এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের পরামর্শে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।