মধ্যবয়সে ব্রণ যে কারণে, করণীয় – DesheBideshe

মধ্যবয়সে ব্রণ যে কারণে, করণীয় – DesheBideshe



মধ্যবয়সে ব্রণ যে কারণে, করণীয় – DesheBideshe

ব্রণ হলো ত্বকের সবচেয়ে সাধারণ অবস্থার মধ্যে একটি যা সমস্ত বয়সকে প্রভাবিত করে। ব্রণ বলতে সবাই অল্পবয়সী কিশোর-কিশোরীদের বা টিনএজের রোগ ভাবেন। কিন্তু বাস্তবে মধ্য বয়সে এসেও এ সমস্যাটি নিয়ে অনেকেই ভুগছেন। এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে অতিরিক্ত উদ্বেগ ও মানসিক চাপ। ব্রণ সাধারণত বেশিরভাগই মুখ, কপাল, বুকে, উপরের পিঠ এবং কাঁধে দৃশ্যমান হয়।

ব্রণ হওয়ার কারণ, করণীয় ও চিকিৎসা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন উত্তরা স্কিন কেয়ার অ্যান্ড লেজারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজি ডা. যাকিয়া মাহফুজা যাকারিয়া।

ব্রণের কারণ : ব্রণ শুরুই হয় শুধু মানসিক দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কারণে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এরকমটা ঘটে মাঝ বয়সের পর।

কীভাবে মানসিক চাপ থেকে ব্রণ হয়—

ব্রণ ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই তৈলাক্ত ত্বকে হয়ে থাকে। সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে বংশগত প্রভাবে এই রোগ প্রথম দেখা দেয়। তবে তৈলাক্ত ত্বক হলেই যে সবার ব্রণ হবে তা কিন্তু নয়। তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী, যারা বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণে আক্রান্ত হননি বা হয়েছিলেন, কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসা ও যত্নে সময় মতো সেরে উঠেছেন, তাদের সহসা মধ্যবয়সে এসে আবার ব্যাপক ব্রণের আক্রমণ ঘটতে দেখা যায়। এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে থাকে অতিরিক্ত উদ্বেগ ও মানসিক চাপ।

শরীরে কর্টিসল নামক একটি হরমোন লেভেল বাড়িয়ে দেয় মানসিক চাপ, এই বৃদ্ধি খুবই স্বাভাবিক। মানসিক উদ্বেগে কর্টিসল লেভেল বাড়বে না, এমন মানুষ পৃথিবীতে নেই।

কিন্তু এই বৃদ্ধি যখন দীর্ঘকালীন হয় এবং ক্রমাগতভাবে চলতেই থাকে, তখনই ঘটে বিপত্তি। কর্টিসলের এই ক্রমাগত বৃদ্ধি মুখের তেলের গ্রন্থি বা সেবেশাস গ্ল্যান্ডের সক্রিয়তা অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেয়, ফলে তেলের গ্ল্যান্ড থেকে সবটুকু তেল ত্বকের উপরিভাগে বেরিয়ে আসতে পারে না, বরং ত্বকের ভেতরেই গ্ল্যান্ডের ভেতর আটকে গিয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করে। বড় বড় ব্রণের জন্ম দেয়। মানসিক চাপ বা স্ট্রেস যখন দীর্ঘমেয়াদি হয়, তখনই এরকম ঘটে থাকে।

ব্রণের সমস্যাটি শুধু টিনএজের নয় বরং শুরুই হচ্ছে টিনএজের পর থেকে। এমনকি মধ্য বয়সে এসেও এ সমস্যাটি নিয়ে অনেকেই ভুগছেন।

ব্রণের প্রতিরোধে করণীয়—

* মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা সার্বিকভাবে চালিয়ে যাওয়া ও তাতে সফল হওয়ার বিকল্প আর কিছু নেই।

* মানসিকভাবে প্রশান্ত থাকতে নিজের মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার জন্য মেডিটেশন অত্যন্ত উপকারী।

* নিয়ম করে প্রতিদিন এক বা একাধিকবার মেডিটেশন করা, সব সময় ইতিবাচক চিন্তাধারায় নিজের মনকে পরিচালিত করার নিরন্তর প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত উপকারী।

* সুন্দর মন প্রশান্তকারী সংগীত বা সুরের মূর্ছনায় অন্তত কিছুক্ষণ নিজের মনকে ডুবিয়ে রাখতে পারলেও ভালো ফল পাওয়া যাবে। তবে এ কাজটি করতে হবে নিয়মিত ভিত্তিতে।

* এসবের পাশাপাশি উপযুক্ত সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করতে হবে।

চিকিৎসা—

মুখে ব্রণের জন্য দরকারি ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্রণ বেশি গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে গেলে মুখে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ারও প্রয়োজন পড়তে পারে। তবে এ ধরনের ব্রণে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার প্রচেষ্টা অব্যাহত না রাখলে যে ধরনের চিকিৎসাই করা হোক না কেন, ব্রণের পুনরাবির্ভাব ঘটা মোটেই বিচিত্র নয়।

আইএ



Explore More Districts