ঘনিয়ে আসছে কোরবানি ঈদ। শেষ মুহূর্তে ভিড় বেড়েছে মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত গাছের গুঁড়ি বা খাইট্টা বিক্রিতে। এতে বিক্রি বেড়েছে মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত খাইট্টা বা গাছের গুঁড়ির। তবে বিক্রেতাদের দাবি, এখনও আশানুরূপ বেচাবিক্রি হচ্ছে না। ঈদুল আজহাকে ঘিরে মৌসুমি ব্যবসা হিসেবে অনেকেই খাইট্টা বিক্রি করে থাকেন। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় খাইট্টার পসরা নিয়ে বসেছেন অনেকে। সাধারণত ঈদের চার থেকে পাঁচদিন আগ থেকে এ ব্যবসা জমে ওঠে। তবে এবার ব্যবসায় ভাটা পড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (৪ জুন) সরজমিনে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কালিপুর ও নিশ্চিন্তপুর বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
কোরবানি ঈদের বাকি আর মাত্র ২দিন। বিভিন্ন হাটে চলছে পশু বেচাকেনা। তার পাশাপাশি শুরু হয়েছে মাংস কাটার কাজে ব্যবহৃত খাইট্টার বেচকানা। দিনরাত পরিশ্রম করে স’ মিলের কারিগররা এ গুঁড়ি তৈরি করছেন।
স’ মিলের মালিকরা জানান, মাংস কাটার কাজে কাঠের তেঁতুল গাছের এই গুঁড়ির কোনো বিকল্প নেই। মূলত তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে খাইট্টা বানানো হয়। কারণ এটি মজবুত ও টেকসই।
আর খাইট্টা বিক্রেতারা জানান, পেশাদার কসাইরা সারাবছরই খাইট্টা কেনেন। তবে কোরবানি এলে সাধারণ মানুষও খাইট্টা কেনার জন্য ভিড় জমান। কিন্তু অন্যান্য বছর কোরবানির ১ সপ্তাহ আগে থেকে বেচাকেনা জমজমাট হলেও, আজকে বেচা বিক্রি বেড়েছে অনেকটাই।
ছেংগারচর বাজারের খাইট্টা বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন আখন জানান, ঈদ এলে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা খাইট্টা কিনে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। সাধারণ মানুষও আসেন কেনার জন্য। তবে আজকে মোটামুটি ভালো বিক্রি হয়েছে।
মাঈনউদ্দিন নামে আরেকজন বিক্রেতা বলেন, মাংস কাটার জন্য তেতুল কাঠের তৈরি খাইট্টার বিকল্প নেই। আকারভেদে প্রতি পিস খাইট্টা ৩০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে আরও বড় আকারের খাইট্টাও আছে এগুলো পেশাদার কসাইরা কিনেন।
এদিকে ক্রেতারা জানান, খাইট্টার দাম অনেক চড়া। আনোয়ার হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, এবার গুঁড়ির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। গতবছর গুঁড়ি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনলেও, এবার সেটি ৫০০-৭০০ টাকার ওপর দাম হাঁকছে।
কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংস প্রক্রিয়াকরণের জন্য অন্যতম উপকরণ হচ্ছে মাংস কেটে টুকরো করার কাজে ব্যবহৃত কাঠের তৈরি খাইট্টা। সারা বছর কসাইখানায় ব্যবহার হলেও, এ গুড়ির চাহিদা বাড়ে ঈদুল আজহায়। এ সময় সারাদেশের আনাচে-কানাচে এই খাইট্টার কদর দেখা যায়।
খাইট্টা কিনতে এসেছেন ছেংগারচর বাজারের কসাই মুন্না। তিনি জানান, বাঞ্ছারামপুর যাবেন কোরবানি পশুর মাংস কাটতে। এজন্য তার ভালো মানের খাইট্টা দরকার। তেঁতুলগাছ ছাড়া অন্য গাছের কাঠের খাইট্টা দা বা ছুরির আঘাত তেমন সহ্য করতে পারে না। এতে কাঠ থেকে ছোট ছোট টুকরা ওঠে মাংসে লেগে থাকে। এটি পরে মাংস থেকে ছাড়াতে বেশ বেগ পেতে হয়।
আম, জাম ও তেঁতুল কাঠ অপেক্ষাকৃত শক্ত। তাই মাংস কাটার কাজে এই কাঠের খাইট্টা ব্যবহার করেন কসাইসহ স্থানীয় কোরবানিদাতারা। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রথথমে স্থানীয় করাতকল ও মহাজনদের কাছ থেকে ছোট ছোট কাঠের গুঁড়ি কেনেন। এরপর সেগুলো নির্দিষ্ট মাপে টুকরা করে খাইট্টা তৈরি করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক,৪ জুন ২০২৫