২৯ January ২০২৫ Wednesday ৯:১১:১৫ PM | ![]() ![]() ![]() ![]() |
ভোলা প্রতিনিধি:

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও ভোলার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাস শ্রমিক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩টি অটোরিকশা আগুনে পুড়ে গেছে এবং আরও ৩টি ভাঙচুর করা হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এরআগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় তারা।
এদিকে বাসচালক ও শ্রমিকদের সঙ্গে অটোরিকশাচালকদের সংঘর্ষে বাস ভাঙচুরসহ বাসের শ্রমিক আহতের প্রতিবাদে মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে ভোলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট ঘোষণা করেছে ভোলা জেলা বাস মালিক সমিতি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব রুটে চলাচলকারী বাসযাত্রীরা। তবে স্বাভাবিক রয়েছে ভোলার ছয় উপজেলার অন্যান্য যান চলাচল।
বাস শ্রমিকরা জানিয়েছেন, অটোরিকশা শ্রমিকরা তাদের যেসব শ্রমিকদের আহত করেছে এবং বাস পুড়িয়েছে তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে যাবে না।
বুধবার সকালে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালে দেখা যায়, জেলার অন্যান্য উপজেলার উদ্দেশে কোনও যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। বাস চলাচল বন্ধ হওয়ার খবরে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। যার কারণে কেউ কেউ দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এদিকে জেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে পুলিশ এবং নৌবাহিনী সদস্যরা।
মঙ্গলবার রাতে জেলা শহরের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালের অভ্যন্তরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রাখাকে কেন্দ্র করে বাসচালক ও শ্রমিকদের সঙ্গে অটোরিকশাচালকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটে। ঘটনায় সংঘর্ষের সময় ৫টি অটোরিকশায় আগুন ও ৫টি ভাঙচুর এবং ২টি বাসে অগ্নিসংযোগ ৭টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাস মালিকরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত অটোরিকশাচালকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা বলেন, ‘পৌরসভার নির্দেশ অনুযায়ী অটোরিকশা মালিকদের আমরা স্ট্যান্ড থেকে তাদের গাড়ি সরিয়ে নিতে বলেছি। এ কারণে তারা উত্তেজিত হয়ে আমাদের বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।’
সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন বলেন, ‘এ ঘটনা বাস মালিক সমিতির পরিকল্পিত। আগে বাস সরিয়ে নিয়ে আমাদের গাড়ির উপরে তারা আগুন দেয়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে ডাকাডাকি করার পরেও তারা গেট বন্ধ করে দেয় এবং আমাদের অটোরিকশার আগুন নেভায়নি।’
ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক বলেন, ‘বাস শ্রমিক ও অটোরিকশা শ্রমিকদের মধ্যে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয় এবং বেশকিছু যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক। পরবর্তীতে আমরা দেখবো কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাস ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনও উদ্যোগ কেউ নেয়নি।’
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |