ভোগান্তিমুক্ত সেবা পেতে সিটিজেন চার্টার জানতে হবে
সঞ্জয় বিশ্বাস, নিজস্ব বার্তা পরিবেশক।।
একটি দেশের সরকারী অফিসগুলোতে জনগণ কী কী সেবা পাবেন এবং কিভাবে পাবেন এবং তা কতদিনের মধ্যে পাবেন তা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকে সিটিজেন চার্টার বা নগরিক সনদে।
এছাড়া এসব সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা যথাযথ নিয়মে এ সেবা না দিলে বা এ ক্ষেত্রে বিলম্ব করলে সেবা গ্রহীতা কোথায় কার কাছে অভিযোগ করবেন সেগুলো উল্লেখ থাকে এই সনদে।
সরকারী নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে সরকারী অফিসগুলোতে সেবা গ্রহীতাদের এ বিয়য়ে জানাতে অফিসের প্রবেশ মুখে বা সহজে দৃষ্টি পরে এমন জায়গায় সিটিজেন চার্টার টাঙ্গানো থাকে।
কিন্তু সেবা গ্রহীতারা সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে জানেনও না আবার তারা এগুলো পড়েও দেখেন না। সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে না জানার কারনে সেবা প্রদানকারীর কাছে ভোগান্তির শিকার সহ দালাল চক্রের দ্বারা প্রতারিত হয়ে থকেন অনেকেই।
গোপালগঞ্জেও সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে সেবা গ্রহীতাদের অজ্ঞতার কথা উঠে আসে “আজকের গোপালগঞ্জ” অনলাইনের অনুসন্ধানে।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবেশের পরই ডান দিকে অনুসন্ধান ডেস্ক সংলগ্ন দেয়ালে বড় করে সংযুক্ত করা হয়েছে সিটিজেন চার্টার। প্রতিদিন অসংখ্য লোক সেবা গ্রহণের জন্য এই অফিসে আসলেও অনুসন্ধানের সময় কাউকেই সিটিজেন চার্টারে প্রতি খেয়াল করতে দেখা যায় নি।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমিজমার দলিলপত্র সংক্রান্ত সেবা গ্রহণে এসছিলেন সদর উপজেলার কাজুলিয়া ইউনিয়নের বাজুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ রানা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সেবা সনদ বা সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অবাক হন। তিনি বলেন এ বিষয়ে তিনি তেমন কিছু জানেন না। এ অফিসের প্রবেশ মুখে সিটিজে চার্টারে অবস্থান সম্পর্কে বলা হলে তিনি বলেন, এই চার্টার তার চোখে অনেকবার পরেছে কিন্তু কখনো পড়ে দেখা হয়নি তার।
এছাড়া গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেবা নিতে এসেছিলেন, গোপালগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা কপিল পোদ্দার, তিনি একটি এমপিওভূক্ত কলেজে শিক্ষকতা করেন। সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে জানেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে নানা সেবা গ্রহনে তিনি সরকারী অফিসগুলোতে গেলেও সিটিজেন চার্টার খেয়াল করে দেখেননি। সিটিজেন চার্টারের গুরুত্বের কথা উপস্থাপন করার পর তিনি বলেন, যদি আমরা সিটিজেন চার্টার খেয়াল করি তাহলে আমাদের সেবাগ্রহণ অনেক সহজ হতে পারে।
জমির পর্চা তুলতে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসেছিলেন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এস এম কায়েস আহমেদ। এই অফিসেরে সেবা সংক্রান্ত সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে জানেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জানান এ বিষয় তার সম্পুর্ণ অজানা। সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে ধারনা দিলে তিনি বলেন, এটা তো খবই গুরুত্বপূর্ণ সনদ । এ বিষয়ে জানলে খুব সহজে সেবা পাওয়া যাবে বলে অভিমত তার।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলছিলেন, সিটিজেন চার্টর বা নাগরিক সনদ সম্পর্কে দেশের জনগণের বিশাল একটি অংশ কিছুই জানেননা। সরকারের কোন প্রতিষ্ঠান কি সেবা দেয়, কিভাবে সেবা দেয়, জনগণ সেবা কিভাবে নিতে পারেন এবং প্রতিষ্ঠান কিভাবে সেবা দিতে পারে এই বিষয়গুলি পরিষ্কারভাবে জানার জন্য সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। সিটিজেন চার্টর বা নাগরিক সনদ সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার জন্য কিছু কর্মসূচী থাকলেও এখনো সেটি অধিকাংশ মানুষের দোড়গোড়ায় পৌছায় নি। সিটিজেন চাটার সম্পর্কে অজ্ঞতার কারনে সেবাগ্রহীতারা অনেক সময় ভোগান্তির শিকার হন এবং দালাল চক্রের দ্বারা প্রতারিত হয়ে থাকেন। এ জন্য সেবা গ্রহীতাদের সিটিজেন চাটার বা নাগরিক সনদ সম্পর্কে জানার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত সরকারী কর্মকর্তাদেরও উচিত এই চার্টার সম্পর্কে অজ্ঞ মানুষকে ভোগান্তিতে না ফেলা এবং তাদের সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে জানতে উৎসাহিত করা ।
দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে সিটিজেন চার্টার সম্পর্কে সেবা দাতা ও গ্রহীতার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানা প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। সঞ্জয় বিশ্বাস, ১৫.০৬.২০২২
এ জাতীয় আরো খবর..