নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে বিয়ের দাবীতে পরকিয়া প্রেমিকের বাড়িতে গৃহবধূর অনশন। বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে ৫ দিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছে ওই গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামে।
জানা গেছে তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিমছাট গোপালপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদ (কাচু) দেওয়ানির ছেলে মোঃ লিটন মিয়া(৩৫) ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়ন এর ৯ নং ওয়ার্ডের মোজাম্মেল হোসেন মোজাম এর মেয়ে মৌসুমি খাতুন এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে প্রায় ১৪ বছর আগে বিবাহ সম্পূর্ণ হয়।এই সংসার জীবনে দুটি সন্তান রয়েছে । এমতাবস্থায় মৌসুমী খাতুন একি ইউনিয়নের দক্ষিন ছাট গোপালপুর গ্রামের জহির উদ্দিন ( স্বর্নকার) এর ছোট ছেলে আতিকুল ইসলাম (১৯) সাথে পরিচয় হয়। মৌসুমী খাতুন বীর মুক্তিযুদ্ধা হাতেম আলী কিন্ডারগার্টেন স্কুলে চাকুরী করতো। আতিকুল তার বড় ভাইয়ের সন্তানকে স্কুলে নেয়া দেয়ার যাতায়াতের সময় তাদের পরিচয় থেকে বন্ধুত্ত তারপর একটা সময় পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এ সম্পর্কের জের ধরে মৌসুমী খাতুন তার স্বামী ও দুই সন্তানকে রেখে গত ১৮ জুন শনিবার প্রেমিক আতিকুলের হাত ধরে ঢাকা পালিয়ে যায়। পরে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কে অভিযোগ দিলে চেয়ারম্যান প্রেমিক যুগলকে তাদের পরিবারের ও থানার সহযোগিতার মাধ্যমে ঢাকা থেকে ২১ জুন মঙ্গলবার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে চেয়ারম্যান তিন পক্ষকে ডেকে মীমাংসা চেষ্টা চালালে মৌসুমীর স্বামীর পক্ষ বলেন আমরা এই বউকে নিবো না।প্রেমিক আতিকুল বলেন আমি বিয়ে করবো না আমাকে জোর করে নিয়ে গেছে ঢাকায়।এর পর কোনো সমঝোতায় না আসলে মৌসুমী খাতুন এর স্বামীর দেওয়া স্বর্ণ অলংকার ও ৩৫ হাজার টাকা সহ একটি মোবাইল ফোন মৌসুমীর কাছ থেকে উদ্ধার করে স্বামী লিটন ও শশুরের কাছে হস্তান্তর করেন চেয়ারম্যান।
পরে ওই রাতে সমঝোতায় না আসলে ও রাত গভীর হওয়াতে চেয়ারম্যান প্রেমিক আতিকুলকে আতিকুলের বড় ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করে বলেন এ বিষয়ে নিয়ে আগামীকাল বসবো সে পর্যন্ত আপনার ছোট ভাই আপনার কাছে রেখে দিলাম আপনি আপনার বাসায় নিয়ে যান এবং মৌসুমী খাতুন আমার জিম্মায় আমার বাসায় থাকবে। চেয়ারম্যানের কথার উপর ভিত্তি করে যার যার মত সবাই সেই রাতে চলে যায়।
এদিকে ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও আতিকুলকে তার পরিবার চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে আসতে পারেনি এবং ধোয়া ছোঁয়ার বাইরে চলে যায় আতিকুলের পরিবার।পরে এই ঘটনায় এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করলে ওই ইউনিয়নে ছেলের বড় ভাই আবু বক্কর একটি পালসার ১৫০ সিসি কালো রঙের গাড়ি ধামইরহাট বাজারে মৌসুমীর খাতুনের স্বামী লিটনকে রাত ১ টার দিকে ঘুরতে দেখে স্থানীয়রা।পরে স্থানীয় লোকজন সেই গাড়িটিকে আটক করে। আটকের পর আবু বক্করকে বলেন এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত গাড়িটি স্থানীয় লোকজনের কাছে থাকবে।গাড়ি আটকানোর উভয় পক্ষে তর্ক বির্তক হলে খবর পেয়ে
খোরশিদ নুর আলম কামাত আঙ্গারীয়া দাখিল মাদ্রাসা বি এস সি ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করে। বি এস সি এলাকাবাসীকে বলেন গাড়িটি ছেরে দেন আমার জিম্মায় আমি আগামীকাল চেয়ারম্যানের সঙ্গে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে সুষ্ঠু সমাধান করব। পরে এলাকাবাসী গাড়ি ছেড়ে দিলেও পরের দিন থেকে আর তাদের কোনো খোঁজ মিলেনি।
গাড়ির ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএসসি বলেন আমার জিম্মায় নিয়ে আমি গাড়ি ছেড়ে দিয়েছি ।পরের দিন সমাধানের জন্য আমি ছেলের বড় ভাই আবু বক্কর কে ফোন দিলে আমার ও ফোন রিসিভ করেনি তারা আমাকেও এরিয়ে চলছে।
মৌসুমী খাতুন প্রেমিক আতিকুল এর বাড়িতে ওঠার বিষয়টা চেয়ারম্যান এর কাছে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন ঘটনা সব সত্যি মেয়েটি আমার বাড়িতে চার দিন ছিল। আমি সমাধানের জন্য আতিকুল ও তার পরিবারকে ডাকলে তাদেরকে পাইনি। পরে মেয়েটি আমার বাসাতেই ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করে এবং বলে আতিকুল ছাড়া আমি বাঁচবো না ওই আতিকুলকে আমি বিয়ে করবো।পরে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে আমার বাড়ি থেকে মৌসুমী চলে যায় একাই।লোকের মাধ্যমে জানতে পারলাম আতিকুলের বাড়িতে উঠেছে মৌসুমী।
মৌসুমী চেয়ারম্যান এর বাড়ি থেকে শনিবার ২৫ জুন দুপুর ১২ টার দিকে আতিকুলের বাড়িতে ঢুকে পরে।মৌসুমী বলেন আমার সংসার নষ্ট করেছে আতিকুল । আমি আতিকুলকে বিয়ে না করতে না পারলে আত্মহত্যা করবো।
আতিকুলের বড় ভাইয়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে বলেন আমার কাছে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে টাকা চেয়েছে সমাধানের জন্য আমার কাছে আমি দেই নেই।চেয়ারম্যান এ বিষয়টা সমাধান করে দিতে চেয়েছিল কিন্তু চেয়ারম্যান ৪ দিন উনার বাড়িতে মেয়েটিকে রেখে গত শনিবার দুপুরের দিকে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় এখন মেয়েটি আমাদের বাড়িতেই আছে। আরো বলেন আমার ভাইয়ের যদি কোন দোষ থাকে আইন আছে আইন যেটা করবে সেটাই মাথা পেতে নেব।
এ বিষয়ে ভুরুঙ্গামারী থানায় জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন এ বিষয়ে জানি যে তারা দুজন ঢাকায় গিয়েছিল ।পরে চেয়ারম্যান নিয়ে আসছে সমাধান করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু মেয়ে ওই ছেলের বাসায় উঠেছে সেটা জানিনা। এখন শুনলাম দেখি বিষয়টা কি করা যায়।