নয়াদিল্লি, ১৪ জুন – দেশীয় এয়ারলাইন পরিচালিত সব বোয়িং ৭৮৭ বিমানের খুঁটিনাটি নিরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ। আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৭০ জন নিহত হওয়ার পর এমন নির্দেশ দিলো ভারত সরকার। শনিবার (১৪ জুন) ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাম মোহান নাইডু বলেন, কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার সম্ভাব্য সব কারণ খতিয়ে দেখছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার এয়ার ইন্ডিয়াকে তার বোয়িং ৭৮৭-৮/৯ বিমানের ওপর অতিরিক্ত রক্ষণাবেক্ষণ পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এর মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু টেক-অফ প্যারামিটার পর্যালোচনা, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন কন্ট্রোল পরীক্ষা ও ইঞ্জিন জ্বালানি-সম্পর্কিত নিরীক্ষা।
বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাম মোহন নাইডু দিল্লিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বোয়িংয়ের ৭৮৭ বিমানগুলোতে নজরদারি বাড়াতেও নির্দেশ দিয়েছি আমরা। ভারতের বহরে বোয়িং ৭৮৭ মডেলের ৩৪টি বিমান রয়েছে। এরই মধ্যে ৮টির নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং জরুরি ভিত্তিতে বাকিগুলোর কাজও শুরু হচ্ছে।’
তবে সরকারি কর্মকর্তারা এসব নিরীক্ষায় অংশ নেবেন কি না, তা জানাননি তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড্ডয়নের পরই দুর্ঘটনায় পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানটি। বিমানবন্দরের কাছে একটি মেডিকেল হোস্টেলের উপর বিধ্বস্ত হয় সেটি। ওই বিমানে ২৩২ যাত্রী ও ১০ ক্রু ছিলেন বলে জানিয়েছে ভারতের সিভিল এভিয়েশন দফতর। দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
গত একদশকে একে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়া ৩৩টি বোয়িং ৭৮৭ পরিচালনা করে। আর প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারলাইন ইন্ডিগোর একটি ৭৮৭ রয়েছে। অবশ্য ইন্ডিগো এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
পরীক্ষা-নিরিক্ষার বিষয়ে এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা বর্তমানে এককালীন নিরাপত্তা পরীক্ষা সম্পন্ন করছে। তবে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে আরও দীর্ঘসময় লাগতে পারে। ফলে দীর্ঘপথের কিছু রুটে বিলম্ব হতে পারে।
রয়টার্স জানায়, দুর্ঘটনায় পড়া বিমানটির ইঞ্জিন থ্রাস্ট, ফ্ল্যাপ এবং উড্ডয়নের সময় ল্যান্ডিং গিয়ার কেন খোলা ছিল — এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখছে এয়ার ইন্ডিয়া ও ভারত সরকার।
বিজে মেডিকেল কলেজের জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ধবল গামেতি জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ২৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানের ২৪২ আরোহীর মধ্যে মাত্র একজন বেঁচে আছেন। বাকিরা বিমানটি মেডিকেল কলেজের হোস্টেল ভবনে আঘাত করার সময় নিহত হয়েছেন।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ১৪ জুন ২০২৫