২৭ June ২০২৫ Friday ১২:০৭:৪২ AM | ![]() ![]() ![]() ![]() |
বিশেষ প্রতিনিধি:

বেলস পার্ক মাঠের পাশ ঘিরে গঁজিয়ে ওঠা ১৯৮টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে শুনে গতকাল দুপুর থেকে প্রকৃতি প্রেমিরা এখানে আসতে শুরু করেন। তবে পরিবারসহ এখানে এসে তারা হতাশ হন। কেননা উচ্ছেদের নামে এখানে যা করা হয়েছে তাতে নির্মলতাতো দূরে থাক গন্ধ রয়ে গেছে পদে পদে। গতকাল এখানে গিয়ে অন্তত ১০৯টি অবৈধ দোকানের উপস্থিতি দেখা গেছে।
পর্যটক যারা এসেছিলেন তারা দাবি করেন পরিপূর্ণ উচ্ছেদের। তাদের মতে বুক ভরে নি:শ্বাস নেয়ার মতো এই স্থানটিতে এখনো বাতাসে গাঁজা কিংবা ইয়াবার গন্ধ মিলছে। মাদক সরবরাহকারিদের গতকালও প্রকাশ্যে দেখা গেছে। অর্থ্যাৎ অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। কিছু দোকান প্যাকেট করে রেখে দেয়া হয়েছে। অন্য সব দোকান খোলা আছে।
বিশাল এই উদ্যানের পরিবেশ শুভ্র করতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনার মো: রায়হান কাওছার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ি গত পরশু উদ্যান সংলগ্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তার এ প্রচেষ্টা বিসিসি’র সংশ্লিষ্ট উচ্ছেদ কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের যোগসাজশে ভেস্তে যায়। এরা নাম সর্বস্ব একটা অভিযান চালিয়ে বরং স্থায়ী পুনর্বাসন করে গেছেন।
আগেই জানানো হয়েছে যে একটু মুক্ত আকাশ দেখতে, একটু নির্মল হাওয়ার ছোঁয়া পেতে, স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে প্রান বাঁচাতে, একটুখানি পায়ে চলতে কিংবা পরিশ্রান্ত সময়কে জয় করতে স্ব-পরিবারে একটু খানি মাঠে বসে আড্ডা দেয়ার একমাত্র জায়গা হলো এই বেলস পার্ক। অথচ সেখানেও পড়েছে হায়নার ছোবল।
পুরো বেলস পার্ক এলাকায় রাতারাতি গড়ে উঠেছে ১৯৮টি ক্ষুদে দোকান। অভিযোগ এখনো আছে যে ‘বরিশাল সিটি কর্পোরেশের এক অসাধু কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারির হাতে এখানে দোকান করা বাবদ প্রতিদিন ১০০ টাকা করে দৈনিক ১৯ হাজার ৮০০ টাকা তুলে দেয়া হয়। একই লোকজনকে আরো অন্তত ৫০টি বাদাম, বেলুন, হাওয়া-মিঠাইসহ আড়াই হাজার টাকা প্রতিদিন দেয়া হয়। এরা মাসে সাড়ে ৬ লাখ টাকা এবং বছরে ৭৭ লাখ টাকা প্রকাশ্যে হাতিয়ে নিচ্ছে। এর বিনিময়ে এখানে বসানো হয়েছে খাবারের হাট-বাজার। নগরির শান্তিপ্রিয় মানুষের সামান্য নি:শ^াসের সুখটুকু এরা কেড়ে নিচ্ছে। নগরীর প্রধান এই বিনোদন কেন্দ্রকে রীতিমতো খোয়াড় বানানো হয়। যেখানে-সেখানে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ দোকানের আড়ালে চলছে মাদক ব্যবসা। এক শ্রেণির নেশাখোরদের কাছে এই পার্ক এখন তীর্থকেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। নেশার টাকা যোগাড় করতে এরা পার্কে বসেই মোবাইল, স্বর্ণালংকার, টাকা ছিনতাই করছে। এখানে ডিউটিরত পুলিশরা এই চক্রকে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে খবর রয়েছে।
এরই এক পর্যায়ে গত পরশু চালানো হয় উচ্ছেদ অভিযান। কিন্তু যারা উচ্ছেদ চালিয়েছে তাদের মধ্যেই ছিলো ভেজাল। তাই ফলাফল ভালো হয়নি। সাধারন পরিবেশপ্রেমীরা বিসিসি প্রশাসকের উপস্থিতিতে এখানে উচ্ছেদ অভিযান চেয়েছেন। বিসিসির যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারি এই পার্ক এলাকার দোকানীদের কাছ থেকে আর্থিক লাভবান হচ্ছে তাদের তালিকা তৈরি করে শাস্তি প্রদানের জন্যও এরা দাবি করেছেন।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |