বেঁচে থাকলে আজ ওরা পরীক্ষা দিত

বেঁচে থাকলে আজ ওরা পরীক্ষা দিত

শৈশব থেকেই ওরা ছয়জন ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একই স্কুলে পড়ত। পরে একেকজন একেক কলেজে ভর্তি হয়। তবে একই এলাকায় বাসা বলে বন্ধুত্ব অটুট ছিল। প্রতিদিনই তাদের দেখা হতো, আড্ডা হতো। বাল্যবন্ধুদের এ দলটি আজ বৃহস্পতিবার থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। শুধু একজন ছাড়া। সে হচ্ছে আবদুল্লাহ বিন জাহিদ। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় আবদুল্লাহ। মৃত্যুর তিন মাস পর ছিল তার ১৭তম জন্মদিন।

গত মঙ্গলবার রাতে পাঁচ বন্ধু আবদুল্লাহর মা ফাতেমা তুজ জোহরার মুঠোফোনে কল করে বন্ধুর জন্য কান্নাকাটি করেছেন, পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়েছেন। প্রথম আলোর কাছে কথাগুলো বলার সময় ঝরঝর করে কাঁদছিলেন মা ফাতেমা। আবদুল্লাহ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এবার মানবিক বিভাগ থেকে তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

নতুন বছর, জন্মদিন, ঈদ, অন্য উৎসব, পরীক্ষা—একেকবার একেক উপলক্ষ আসে, আর বারবার হাহাকারে ভাসে সন্তান হারানো, প্রিয়জন হারানো পরিবারগুলো। আবদুল্লাহর মতো জুলাই শহীদ মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া (ফারহান ফাইয়াজ), শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ, আফিকুল ইসলাম সাদ, মারুফ হোসেন, মো. আবদুল আহাদ সৈকত, ইমাম হাসান ভূঁইয়া তায়িম ও ইয়াসির সরকারের আজ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। হয়তো মা–বাবার সঙ্গে পরীক্ষার হলে যেত তারা। পরীক্ষার হলের বাইরে উদ্বিগ্ন হয়ে মা–বাবার অপেক্ষা করার কথা ছিল। এর বদলে তাঁদের বুকজুড়ে এখন শুধু শূন্যতা। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল তারা। সেই রেজিস্ট্রেশন কার্ড এখন কষ্টের স্মৃতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে মা–বাবার জন্য। গতকাল বুধবার কথা হয় শোকাহত এসব মা–বাবার সঙ্গে।

Explore More Districts