বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস

বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস

রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মৃত্যুর খবর তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার খোকসা বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায় পৌঁছায় শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুরে। এরপর থেকেই বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।

নিহতের মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা। গ্রামের বাড়ি থাকেন মা বিউটি বেগম ও তার ছোট বোন দশম শ্রেণির ছাত্রী বর্ষা।

ঢাকায় অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত বৃষ্টি খাতুনের (আসল নাম) গ্রামের বাড়িতে ইডেন মহিলা কলেজ থেকে পাওয়া একটি ক্রেস্ট পাওয়া গেছে। ক্রেস্টের গায়ে ‘অভিশ্রুতি বৃষ্টি’ নামটি ইংরেজি লেখা রয়েছে। আর বাকি সমস্ত কাগজপত্রে তার নাম বৃষ্টি খাতুন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত সাংবাদিকের বাবা শাবলুল আলম সবুজ ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। দরিদ্র বাবার তিনটিই কন্যা সন্তান। বড় মেয়ে বৃষ্টি খাতুন। মেজো মেয়ে ঝর্ণা রাজবাড়ী সরকারি কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি রাজবাড়ী থেকেই পড়াশোনা করেন।

বৃষ্টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়েছেন গ্রামের বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে স্নাতক পড়েছেন। বিসিএস কোচিং নিয়েও ব্যস্ত ছিলেন।

বৃষ্টির মেজো বোন ঝর্ণা জানান, ‘অভিশ্রুতি বৃষ্টি’ নামে ফেসবুক একটি আইডি চালাতেন বৃষ্টি। এছাড়া তিনি কখনো অন্য ধর্ম গ্রহণ করার কথা বলেননি। ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য তিন মাস আগে বাড়ি এসেছিলেন।

নিহতের ছোট বোন বর্ষা জানায়, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মায়ের সঙ্গে বৃষ্টির শেষবার ফোনে কথা হয়। বৃষ্টি সাংবাদিকতা করলেও বাড়ি থেকে মা টাকা পাঠাতেন।

বৃষ্টির চাচা জোয়াদ আলী জানান, ঢাকায় ছোট চাকরি করে দুই মেয়েকে বাইরে রেখে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছেন বাবা সবুজ। গত ঈদেও বাড়ি এসেছিলেন বৃষ্টি। সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ করেছেন।

উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মজিদ বৃষ্টির মৃত্যুতে সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ‘মেয়েটি মেধাবী ছিল।’

বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি করেন বৃষ্টি। স্বাধীনচেতা ছিলেন। ছোটবেলা থেকে তিনি সরকারি বড় চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন।

সমকাল পত্রিকার খোকসা প্রতিনিধি মুন্সী লিটন জানান, মূলত তার নাম বৃষ্টি খাতুন হলেও অভিশ্রুতি বৃষ্টি নামে ফেসবুক আইডি চালাতেন। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমে সাংবাদিকতা না করলেও ঢাকায় একটা গণমাধ্যমে চাকরি করতেন এটা তিনি শুনেছেন। 

পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, তার মরদেহ ঢাকায় থেকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

Explore More Districts