
পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের ছেলে ফাহাদ হোসেন প্রামানিক (২৭)। ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ব্রিটেনে পাড়ি জমিয়েছিল কয়েক বছর আগে। ব্রিটেনের ব্রিস্টলের একটি বিশ্বদ্যিালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছিল সে। আশা ছিল পড়ালেখা শেষ করে বাড়ি ফিরবে। ফাহাদ বাড়ি ফিরল ঠিকই-কিন্তু লাশ হয়ে। বৃটেনে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হওয়ার এক মাস পর সোমবার রাতে ফাহাদের মরদেহ নিয়ে একটি ফ্রিজিং গাড়ি তার বাসা পঞ্চগড় শহরের পূর্ব জালাসী এলাকায় পৌঁছায়।
একমাত্র ছেলের মৃত মূখ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বাবা পঞ্চগড় শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম প্রামানিকসহ পরিবারের সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পঞ্চগড় শহরের রওশনাবাগ এলাকার দারুল উলুম মদিনাতুল ইসলাম মাদ্রাসা মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের নেকি পাড়ায় দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয় তার মরদেহ।
গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্রিটেনের ব্রিস্টল পুলিশ উড স্ট্রিটে একটি কক্ষ থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। ডেনজিল ম্যাকজেনজি নামের এক বৃটিশ নাগরিকের সাথে ফাহাদের লাশও উদ্ধার করা হয়। ব্রিস্টল পুলিশ এ ঘটনায় লোনাট ভ্যালেন্টাইন (২১) ও জ্যাকব (৪৫) নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে। ব্রিস্টল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তসহ অন্যান্য আইনী প্রক্রিয়া শেষে করে দীর্ঘ একমাস পর ফাহাদের পরিবারের কাছে পাঠায়।
এই এক মাস ব্রিস্টল পুলিশের অধীনে ব্রিস্টল হাসপাতালের হিমঘরে তার মরদেহ রাখা হয়। গত ৮ অক্টোবর বাদ মাগরিব সেখানকার একটি মসজিদে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে গত রোববার বাংলাদেশের একটি বিমানে করে তার মরদেহ বাংলাদেশে লাশ পাঠায় ব্রিস্টল পুলিশ। গত সোমবার গভীর রাতে তার মরদেহ পঞ্চগড়ের বাসায় পৌঁছায়।
জানা গেছে, ফাহাদ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালে পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে ঢাকার ভূঁইয়া একাডেমিতে ভর্তি হন। সর্বশেষ ব্যারিস্টার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমান ব্রিটেনে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের আগেই ফিরে এলেন লাশ হয়ে। ফাহাদের মৃত্যুতে গত একমাস ধরেই শোকের ছায়া প্রামাণিক পরিবারে। লাশ বাড়িতে আসার পর শুরু হয় স্বজনদের আহাজারি। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা নাজমুল হোসেন প্রামাণিক। ফাহাদের বড় দুই বোন রয়েছে। ফাহাদের বাবা নাজমুল হোসেন প্রামাণিক ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে এ ঘটনার স্ষ্ঠু তদন্ত দাবি করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।