বিয়ানীবাজারে জমে ঊঠেছে ঈদবাজার

বিয়ানীবাজারে জমে ঊঠেছে ঈদবাজার

বিয়ানীবাজারে জমে ঊঠেছে ঈদবাজার

মুসলমান দের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর আর এই ঈদ কে ঘিরে নিজেকে বর্ণিল সাজে সাজাতে নতুন কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকেন সবাই, রমজানের শেষদিকে ব্যস্ত সময় পার করেন ব্যবসায়ি ও ক্রেতারা । আর মাত্র কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ঈদ উৎসবকে ঘিরে বিয়ানীবাজার পৌরশহরসহ উপজেলার অন্যান্য বাজারের বিপণিবিতানগুলো জমে ওঠেছে।কাপড়ের প্রত্যেক দোকানে রয়েছে নানা রঙের, নানা ডিজাইনের পাকিস্তানি ট্রেন্ডিং থ্রি পিস। সব চাপিয়ে বিয়ানীবাজারের কয়েকটি মার্কেট, নামীদামি কাপড়ের দোকানসহ ছোট বড় সব কাপড়ের দোকান সয়লাভ পাকিস্তানি ট্রেডিং থ্রি পিস জ্বরে।

ঈদের মাত্র কয়েকদিন পুর্বে বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে ঈদ বাজার। বিশেষ করে কাপড়ের দোকানগুলো সব বয়সি নারী, তরুণী ও শিশুদের উপস্থিতী রয়েছে। সে তুলনায় পুরুণ কিংভা তরুণ উপস্থিতি নিন্তান্তই কম। ঈদের কেনা বেচা চলে সেহরি পর্যন্ত। কেনা বেচার এ ঝড় চলবে আগামী ২৪ রমজান পর্যন্ত। এই ক’দিন পুরো ঈদ বাজারের উম্মাদনা শেষ হবে চাঁদা রাতে।

ক্রেতারা বলছেন, আর বেশিদিন বাকি নেই ঈদের। পছন্দসই কেনাকাটার এখনই সময়। মানসম্মত নয় এমন পোশাকেও বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নাদিয়া নামের এক ক্রেতা জানান, গরমের কারণে এবার একটু হালকা কাপড়ের পোশাক খুঁজছি। কারণ ঈদে ঘুরাঘুরিতে আরামদায়ক পোশাক প্রয়োজন। রাফসান নামের এক ক্রেতা এসেছেন পাঞ্জাবি কিনতে। তিনি কয়েক দোকান ঘুরে কাশ্মীরি পাঞ্জাবি কিনেছেন।

বাবার মায়ের সঙ্গে ছোট্ট আহনান এসেছে ঈদের কেনাকাটা করতে। আহনান জানায়, সে এবার পাঞ্জাবি, প্যান্ট এবং শার্ট কিনেছে। এছাড়া খেলনা কেনার জন্য বাবা-মাকে বলেছে।পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন ক্রেতারা। তবে প্রায় সবার মুখে শোনা গেছে একই আক্ষেপ—‘এবার পোশাকের দাম অনেক বেশি।’ কৌতূহলের বিষয় হলো, শুধু ক্রেতা নয়, বিক্রেতারাও বলছেন একই কথা। পোশাকের দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন বেশির ভাগ ক্রেতা। বিশেষ করে যাঁদের আয় নির্ধারিত ও সীমিত।

এবার ভারতের বদলে পাকিস্তান, চীন ও থাইল্যান্ডের কিছু পোশাক ঈদের বাজারে এসেছে বলে জানান দোকানিরা। তবে ভারতীয় পণ্যের তুলনায় সেগুলোর দাম বেশি। একটি কাপড়ের দোকানের বিক্রয়কর্মী রাশেদ হোসেন বলেন, ‘ইন্ডিয়ার যে ড্রেসটা আমরা ৫ হাজার টাকায় বেচতে পারি, পাকিস্তানের সেই ড্রেস ১৫ হাজারে বেচতে হয়। পাকিস্তানের ড্রেসের কোয়ালিটি ভালো হয়। সে কারণে দামও অনেক বেশি।

বিয়ানীবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম শামীম জানান, এবারের ঈদকে ঘিরে শবেবরাতের পর থেকে বিকিকিনি শুরু হয়েছে।

বিয়ানীবাজারের বিপনী বিতানগুলো সোয়াবাতের ফ্রক, গাউন, থ্রিপিস এবং পাকিস্তানি নূর, তাওক্কাল, কারিজমা ব্রান্ডের থ্রিপিস দিয়ে সাজানা হয়েছে। নারীদের ফ্লোরটার্চ, আনারকলি, মাসাজকালি, লেহেঙ্গা, আফসানা ও উরকে চলেসহ বাহারি সব নামের থ্রি-পিস আর বাহারি পোশাকের সাজ সজ্জা শোভা পাচ্ছে দোকানে ও শপিং মলে।

শুধু তাই নয়, কুশাল, খানসা, আবগজেব, কাশমিরি, সুলতান, বিবা কালেকশন, পার্টি, সামছিসহ পুরুষের পাঞ্জাবিতেও রয়েছে রকমারি নাম। এছাড়াও ঈদ আয়োজনে ছেলেদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়া, কটি। মেয়েদের জন্য থাকছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, ফতুয়া, টপস, স্কার্ফ। পাশাপাশি পাবেন কিছু হাতে বানানো জুয়েলারিও। শিশু-কিশোরদের আয়োজনে ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট আর মেয়েদের জন্য রয়েছে টপস, ফ্রক, সালোয়ার-কামিজ ও ওড়না।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের হাজী আব্দুস সাত্তার শপিং কমপ্লেক্স, আজির প্লাজা, আল-আমিন সুপার মার্কেট ছাড়াও অন্যান্য বিপনী বিতানগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে ক্রেতা আসছেন। কেউ দেখছেন আবার কেউ চুপচাপ ফিরে যাচ্ছেন। নার্গিস বেগম নামের এক ক্রেতা বলেন, ছোট ছেলের জন্য ৩৫০ টাকায় একটি পাঞ্জাবি কিনেছি। এবার সব জিনিসের দাম অনেক।

বিয়ানীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক হাসান শাহরিয়ার বলেন, বিপণিবিতানগুলোর মতো অনলাইনেও এখন ঈদের ব্যবসা জমে উঠেছে। অনলাইন বাজারের মূল ক্রেতাই হচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। তাই তাঁদের আগ্রহের জিনিসপত্রই অনলাইনে বেশি বিক্রি হয়। তিনি বলেন, অনলাইনে কেনাকাটা এখন বেশ জনপ্রিয়। ফেসবুকে এমন কিছু পেজ আছে, লাইভ চলাকালেই তাদের পণ্য বিক্রি হয়ে যায়। তারা ক্রেতাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে। তা ছাড়া অনলাইনে ভিন্ন রকম নকশার কাপড়চোপড় পাওয়া যায়। আবার দামও সহনীয় থাকে।

ডিএস/আরএ

Explore More Districts