বিপুল পরিমাণ ভারতীয় অস্ত্র–গোলাবারুদের উৎস কোথায়? – Habiganj News

বিপুল পরিমাণ ভারতীয় অস্ত্র–গোলাবারুদের উৎস কোথায়? – Habiganj News

 

 

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর বাজারে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদের উৎস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। স্থানীয় এক সেলুন ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অভিযোগ, পাল্টা অভিযুক্ত হিসেবে এক ব্যবসায়ীর নাম উঠে আসা এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্রকে ‘ভারতীয়’ বলে দাবি—সব মিলিয়ে এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জগদীশপুর বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী বিমল শীলকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ার একটি চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ গিয়ে পড়ে স্হানীয় এক ব্যবসায়ীর দিকে৷

ঘটনাটি ঘটে গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে। ওই সময় বিমল শীলের সেলুন থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে রয়েছে—

৪টি বিস্ফোরিত গ্যাস সেল,২টি অবিস্ফোরিত গ্যাস সেল,শটগানের ২ রাউন্ড অবিস্ফোরিত কার্তুজ,১৩টি খালি কার্তুজ,একটি ওয়াকিটকি ও একটি মাউথ পিসসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম।

 

এ ঘটনায় প্রথমে তথ্যদাতা হিসেবে পুলিশের নজরে আসেন অনিন্দ্য রায়। পরবর্তীতে বুধবার মাধবপুর থানা পুলিশ অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে, যেখানে বিমল শীলকে ১ নম্বর এবং অনিন্দ্য রায়কে ২ নম্বর আসামি করা হয়।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, উদ্ধার হওয়া কিছু বোমা ও বিস্ফোরককে তারা “ভারতীয় বোমা” বলে মনে করছেন। এতে সীমান্তপথে অস্ত্র চোরাচালানের আশঙ্কা রয়েছে৷ সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এসব অস্ত্র কোনো সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের মাধ্যমে এসেছে কি না—তা খতিয়ে দেখার জোর দাবি উঠেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, একজন ব্যক্তির পক্ষে একা এত বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব। ফলে তাদের পেছনে আরও বড় কোনো সিন্ডিকেট কিংবা রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া রয়েছে কি না—তাও তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এসব অস্ত্র কেবল ব্যক্তিগত বিরোধের ফল নয়; বরং দেশে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতির অংশও হতে পারে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অনিন্দ্য রায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

 

অপরদিকে সেলুন ব্যবসায়ী বিমল শীল অভিযোগ করে বলেন,“আগেও আমাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এবারও একই ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে আমাকে বিপদে ফেলেছে। আমি সরকারের কাছে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আমি শঙ্কিত।”

 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাকিব খান বলেন,

“অস্ত্রগুলোর উৎস ও যোগানদাতা শনাক্তে আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। প্রয়োজনে একাধিক সংস্থার সহায়তা নেওয়া হবে।”

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মোর্শেদ বলেন,“পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে। তদন্তে যার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

এদিকে স্থানীয়দের একাংশের দাবি, এই অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় যেন কোনোভাবেই নিরীহ কাউকে ফাঁসানোর আড়াল না হয়। তারা দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের পাশাপাশি অস্ত্র চোরাচালান নেটওয়ার্ক উন্মোচনের জোর দাবি জানিয়েছেন।

Explore More Districts