বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পথে অগ্রগতি

বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পথে অগ্রগতি

বাংলাদেশের সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট বলা হয়েছে, রাষ্ট্র বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক রাখবে। হাইকোর্টের এই রায় সেই সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দ্বার উন্মোচন করেছে। এটি শুধু বিচার বিভাগের জন্য নয়; বরং দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার পাওয়ার এক নতুন আশ্বাস।

এই রায়ের ইতিবাচক দিক হলো, এটি কেবল তাত্ত্বিক স্বাধীনতার দাবি করছে না; বরং কার্যকর বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট পথও দেখিয়ে দিচ্ছে। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তগুলোর প্রতিফলন এতে পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের মতামতও বলছে, এটি দক্ষিণ এশিয়ার বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং দীর্ঘ মেয়াদে প্রশাসন ও আদালতের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করবে।

এখন এ রায় বাস্তবায়ন করতে হবে আন্তরিকতার সঙ্গে। প্রশাসনিক জটিলতা, প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিরোধ কিংবা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যেন এই রায়ের ইতিবাচক প্রভাবকে ক্ষুণ্ন না করে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার-উদ্যোগ এ রায়কে ভিত্তি করে এগোলে বিচার বিভাগের কাঠামোগত সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন হতে পারে।

আমরা মনে করি, হাইকোর্টের এই রায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রযাত্রা। এখন দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের; দ্রুত পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা এবং সুপ্রিম কোর্টের কাছে অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়ার পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

আমরা জানি, অন্তর্বর্তী সরকার খুব বেশি সময় ক্ষমতায় থাকবে না। তাই পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকেও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কোনোভাবেই তাদের ভুলে যাওয়া চলবে না, স্বাধীন বিচার বিভাগ গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি।

Explore More Districts