২৭ অক্টোবর ২০২৩ শুক্রবার ১০:০২:০৭ অপরাহ্ন | ![]() ![]() ![]() ![]() |
নদী পাড়ে ছোট ছোট সিন্ডিকেটসিন্ডিকেটের সাথে জড়িত মৎস্য অফিসের নিয়োগ করা নৌকার মাঝিরা অভিযান আসছে না আশানুরুপ সফলতাঅবাধে মাছ শিকার করছে মৌসুমি জেলেরা।

আল-আমিন,বাবুগঞ্জ ॥ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আরিয়াল খাঁ নদী দ্বারা বেষ্টিত। “মা”ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের ১৪দিন অতিবাহিত হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার মধ্য দিয়ে। এই উপজেলায় মৎস্য অভিযানকে ঘিরে সফলতার চেয়ে ব্যার্থতার গুঞ্জনটাই বেশি। সমীকরণ অনুযায়ী বলা যায় বিগত যে কোন ইলিশ রক্ষা অভিযানের তুলনায় এবার ঢিলেঢালা অভিযান চলছে এই উপজেলায়। আর এই সুযোগে মৌসুমি জেলেরা মা ইলিশ শিকারে মহোৎসব মেতে উঠেছে। এই ১৪ দিনে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে সফলতার ফিরিস্তটা খুবই ছোট। তিনটি নদীতে একটি ট্রলার দিয়ে অভিযান পরিচালনাকে আই ওয়াস বলে মনে করছেন সাধারণ জনগন। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে বরাদ্দ সল্পতার কারনে একাধিক ট্রলার দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তাই একটি ট্রলার দিয়ে অভিযান করা হয়। আর সাথে একটি স্পিরিট বোট রাখা হয়।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১২ই অক্টবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ২৭টি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে লক্ষ টাকা মূল্যের ২ লক্ষ ১৬ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের অপরাধে ৭ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৩ জনের ১ মাস মেয়াদে সাজা,২ জনকে ১৫ দিনের জেল ও ২ জনকে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
এছাড়া বাবুগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাবুগঞ্জ উপজেলা মৎস্য দপ্তরের ফিল্ড এ্যাসিস্ট্যান্ট (ইলিশ প্রকল্প)। গত ৪ দিনে ১৮ কেজি ইলিশ জব্দ দেখানো হলেও এর আগের ১০ দিনের নিদৃষ্ট কোন ইলিশ জব্দের পরিমান দেখানো হয়নি। এখন পর্যন্ত ৪-৫ টি এতিম খানায় জাটকা ইলিশ দেওয়া হলেও উপজেলার ৮ সরকারি নিবন্ধিত এতিম খানায় ইলিশ পাইনি বলে জানাগেছে। উপজেলার সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আরিয়াল খাঁ তিন নদীতে মৌসুমী জেলেরা প্রতিদিন নানা কৌশলে নদীতে জাল ফেলে মা ইলিশ শিকার করছে। নতুন নৌকায় মেশিন স্থাপন করে দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রলার নিয়ে নদীতে মাছ শিকার করছে তারা। অভিযান উপলক্ষে নদী পাড়ে ছোট ছোট সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। সিন্ডিকেটের সাথে মৎস্য অফিসের নিয়োগ করা নৌকার মাঝিরা জড়িত আছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে নদীতে অভিযান চালিয়ে আশানুরুপ সফলতা আসছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, আড়িয়াল খা নদীর ছোট মীরগঞ্জ, কাঠেরচর এলাকায় শত শত ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে ইলিশ শিকার করা হচ্ছে। সন্ধ্যা নদীর চরমলেঙ্গা, রাকুদিয়া, বকুল তলা, কেদারপুর খেয়াঘাট, রাজগুরুসহ কয়েকটি পয়েন্টে মা ইলিশ শিকারের মহাৎসব চলছে। এছাড়া সুগন্ধা নদীতে অভিযানের ট্রলার পৌছাতে পৌছাতে অসাধু জেলেরা ইলিশ শিকার করে ডাঙায় উঠে যায়। এ নদীর রমজানকাঠী, লাশঘাটা, মোল্লার হাট, আগরপুর রাস্তার মাথায় কোন প্রকার ভীতি ছাড়াই ইলিশ শিকারে মেতেছে নিবন্ধিত ও মৌসুমি জেলেরা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শিমুল রানী পাল বলেন, নদী গুলোতে প্রতিদিন দিবা-রাত্রি ১ টি টিম অভিযান করছে। আমি অসুস্থ থাকায় নদীতে যেতে পারছি না। অভিযান পরিচালনার সব বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদারকি করছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা রহমান বলেন, লোকবল সংকটের কারনে প্রত্যান্ত অঞ্চলের কিছু যায়গায় জেলারা মাছ ধরার খবর আসে। অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে আমরা স্পিরিট বোটে টিম পাঠিয়ে যথাসাধ্য প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |