বানিয়াচংয়ে হত্যার জের ধরে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট – Habiganj News

বানিয়াচংয়ে হত্যার জের ধরে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট – Habiganj News

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের ৬নং কাগাপাশা ইউনিয়নের বাতাকান্দী গ্রামে ৮জুন(রবিবার)বেলা সাড়ে ৪টায় হারুন মিয়ার পক্ষের লোকজন ও উসমান মিয়ার পক্ষের লোকজন সংঘর্ষ জড়ালে হারুন মিয়ার পক্ষের হযরত আলী(৫৫)নামের একজন টেটা বিদ্ধের মৃত্যু(হত্যা)কে কেন্দ্র করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া প্রতিপক্ষ উসমান মিয়ার ও তার ভাইদের ঘর-বাড়িতে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাট চালায় হারুনের লোকজন।

 

৯জুন(সোমবার)টানা ২য় দিন পুরুষ শূন্য বাড়ি-ঘরে হামলা,ভাংচুর লুটপাট অব্যাহত রাখে হারুন মিয়ার লোকজন।

 

এমনটাই অভিযোগ করেন হত্যার পর থেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সংঘর্ষের দিন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া উসমান মিয়ার পরিবার ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যগন।

 

৮জুন(রবিবার)টেটা বৃদ্ধ আহত হযরত আলী(৫৫)কে চিকিৎসার জন্য নৌকা যোগে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়।

 

এই সংবাদটি গ্রামে পৌঁছার সাথে সাথে উসমান মিয়াসহ তার লোকজন বাড়ি – ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান।

 

এদিকে হারুন মিয়ার পক্ষের লোকজন উসমান মিয়ার বিল্ডিং ঘরসহ তার ভাইদের ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ লুটপাট করে নিয়ে যায়।

 

ঘরের আসবাপত্র ভাংচুর করে নগদ টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয় তারা।

 

পরদিন ৯জুন(সোমবার) আরও বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর হামলা চালিয়ে ভাংচুর,লুটপাট করে কয়েকটি বাড়ির নগদ টাকা পয়সা,স্বর্ণালংকার, গবাদি পশু (গরু) ধান,চাউলসহ মূল্যবান জিনিস পত্র ২য় দিনের মতো লুটে নেয় হারুনের লোকজন।

 

লুটে নেওয়া কয়েকটি ঘরের মধ্যে ফাইজুল মিয়া,খোকন মিয়া এবং আলামিন মিয়ার ঘর-বাড়িতে হামলা ভাংচুরসহ আরও বাড়ি-ঘরে লুটপাট করে নিয়ে যায় হারুন পক্ষের লোকজন।

 

এমনটাই অভিযোগ করেন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া উসমান মিয়ার পরিবার ও অন্যান্য পরিবারের সদস্যগন।

 

তারা জানান,২দিনে তাদের নগদ টাকা,স্বর্নালংকার, গবাদি পশু,ধান,চাউলসহ ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করে জানান, পুরুষ শূন্য পরিবারের মহিলা সদস্যাগন ও পালিয়ে থাকা সদস্যরা।

 

তারা এই লুটতরাজকারীর তান্ডবলীলার হাত থেকে তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে বাঁচানোর জন্য,বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সু-দৃষ্টি কামনা চেয়ে প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী করে বলেন,এসব লুটতরাজকারীদেরকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় এনে বিচার ব্যবস্থা করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য।

 

এমনকি হবিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল গোয়েন্দা সংস্থার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট আকুল আবেদন জানিয়ে তারা আরও বলেন,তাদের বাড়ি-ঘর ও পরিবারের শিশু বাচ্চাসহ মহিলা সদস্যাদেরকে ওদের হাত থেকে বাঁচানোর জোরদাবী জানিয়েছেন।

 

এদিকে ৮জুন (রবিবার)নিহত হওয়া হযরত আলীর লাশ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্তের কাজ সম্পন্ন করে ৯জুন (সোমবার)মাগরিবের নামাজের পর বাড়ির পাশের একটি মাঠে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে গ্রামবাসীর কাছ থেকে খবর পাওয়া যায়।

 

উল্লেখ্য,পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে ৮জুন(রবিবার)বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বাতাকান্দী গ্রামের হারুন মিয়ার লোকজন ও উসমান মিয়ার লোকজনের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও ফাঁড়ি পুলিশ নিরপেক্ষ এলাকাবাসীর সহযোগীতা নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হন।

 

এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়ে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ও সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

এছাড়াও অনেকে প্রাইভেট ও প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা নেওয়ার খবর পাওয়া যায়।

 

আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার পক্ষের মৃত আব্দু রশীদ মিয়ার পুত্র হযরত আলী(৫৫)নামের একজন আহত টেটা বিদ্ধকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়।

 

এই ঘটনায় পুলিশ সংঘর্ষের রাতেই প্রতিপক্ষ প্রধান পালিয়ে যাওয়া উসমান মিয়াকে একই ইউনিয়নের (বগী)গ্রাম তার নানার বাড়ি থেকে আটক করেন।

 

এব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) গোলাম মোস্তাফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,হযরত আলী হত্যার মামলা এখনো হয়নি তবে পক্রিয়াধীন রয়েছে।

অভিযোগ পেয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

১০জুন (মঙ্গলবার) লুটপাট সম্পর্কে জানতে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)

গোলাম মোস্তাফার সাথে সরকারি মুঠোফোন নাম্বারে সকাল ১০টা ৫৯মিনিটে যোগাযোগ করা হলে ফোন হওয়া সত্বেও উনার সাড়া না পাওয়ায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

 

অন্যদিকে সংঘর্ষের ঘটনার ৩য় দিনে পুরুষ শূন্য প্রতিপক্ষের পরিবারের মহিলা সদস্যাগন তাদের বাড়িঘরে টানা ২দিন ভাংচুর লুটপাটের ঘটনার ভয়াবহ পরিস্থিতি পেরিয়ে ৩য় দিন (মঙ্গলবার)বানিয়াচং উপজেলা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে আসেন হারুন বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার জন্য।

 

তাদের বাড়িঘর ৮ ও ৯জুন টানা ২দিন ভাংচুর লুটপাট করে  ১০জুন মঙ্গলবার ৩য় দিন হারুন বাহিনী আগুন ধরিয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন এমন সংবাদ পেয়ে বিষয়টি প্রথমে সংবাদকর্মীকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন এবং তাদেরকে হারুন বাহিনীর হাত থেকে বাঁচাতে সেনাবাহিনীর সহযোগীতার জন্য সকালের দিকে উপজেলা সেনা ক্যাম্পে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তাদের সাথে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজ ছাত্র।

 

এদিকে বাতাকান্দী গ্রামে বাড়ি-ঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাটের ঘটনায় ও মহিলা সদস্যদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বানিয়াচং উপজেলা(আর্মি) সেনা ক্যাম্প থেকে লেফটেন্যান্ট কামালের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য উপজেলার ৬নং কাগাপাশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাতাকান্দী গ্রামের উদ্যেশে সকাল ১০টা ৫৫মিনিটে রওয়ানা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন দায়িত্বরত গোয়েন্দা সংস্থার সেনা সদস্য এসএফ(সৈনিক)।

Explore More Districts