বানভাসী মানুষের মাঝে নেই ঈদ আনন্দ!

বানভাসী মানুষের মাঝে নেই ঈদ আনন্দ!

বানভাসী মানুষের মাঝে নেই ঈদ আনন্দ!

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার হাওরাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মানুষের সব স্বপ্ন ভেসে গেছে। বিভিন্ন স্থানে এখনো পানির নিচে ডুবে আছে সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী ১০ জুলাই সারা দেশে ঈদ-উল আজহা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু বন্যার্তদের মাঝে নেই কোনো আনন্দ।

বন্যাক্রান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চরম সংকটে জর্জরিত সেখানকার মানুষ। দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা থেকে সহসাই রেহাই পাওয়ার আশাও নেই হাওরবাসীর। বেশির ভাগ বাজার ছিল পানির নিচে। এতে চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছেন বন্যাক্রান্ত এলাকার লোকজন। এছাড়া এবার বন্যার কারণে পশু খাদ্য না থাকায় কোরবানির হাটে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু উঠেছে। ফলে এসব গবাদি পশু কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বিক্রেতাদের মধ্যে। অপরদিকে বন্যার কারণে সব হারিয়ে বাধ্য হয়ে গ্রামীণ এলাকার বহু মানুষ এবার কোরবানি দিচ্ছে না বলে জানা গেছে।

বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা রহিজা বানু বলেন, “বন্যায় আমার ঘরে সবকিছু ভাসাইয়া লইয়া গেছে। অহন খাওয়ার মতন কোনো কিছু ঘরে নাই। মানুষে যেইটি দিতাছে হেইটি খাইয়া কোনোমতে দিন কাটাইতাছি।অহন পর্যন্ত আমি সরকারি কোনো সাহায্য পাইছি না। সামনে ঈদ আইতাছে কিভাযে ঈদ করতাম ভাইবা পাইতাছিনা।”

মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলাউদ্দিন বলেন, হাওরাঞ্চলে দফায় দফায় বন্যা হওয়ার কারণে মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফলে হাওরাঞ্চলের মানুষের মাঝে নেই ঈদের আনন্দ। হাওরাঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান শ্রেণির এগিয়ে আসতে হবে।

বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়ন কার্তিকপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বন্যার কারণে আমাদের এলাকার শত শত মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আমাদের এলাকায় ঈদের আনন্দ তো দূরের কথা। মানুষের পেটে এখন ক্ষুধার তাড়না। বন্যাকবলিত মানুষের কাছে ঈদের আনন্দ এখন আকাশের তারার মতো।

বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ বলেন, ঈদের আনন্দের এই মুহূর্তে আমাদের দুর্যোগপূর্ণ সময় যাচ্ছে। বানের পানিতে মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। তাই ঈদের আনন্দের চেয়ে এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানুষের পুনর্বাসন। এই খাতে সরকারের যেমন আরও বরাদ্দ বাড়ানো উচিৎ, তেমনি মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য বিনাসুদে ঘর নির্মাণের ঋণ চালু করার দাবি জানাচ্ছি।

ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য সরকার যা বরাদ্দ দিচ্ছে আমরা তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদেরকে সরকার টাকা দিচ্ছে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আমাদের একে অপরের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Explore More Districts