আসিফ ও মাহফুজ এনসিপির সঙ্গে জড়িত নন । নাহিদ ইসলাম
বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : মে ২৪, ২০২৫, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন /
০

নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা রয়েছেন, তারা এনসিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। তার মতে, যদি তারা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হতে বা নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তাহলে তাদের উচিত হবে সরকার থেকে সরে দাঁড়িয়ে স্বতন্ত্রভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।
শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সেই সময়কার সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমিও তখন তাদের সঙ্গে ছিলাম।
তিনি বলেন, বর্তমানে ওই দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনো সংযুক্তি না থাকলেও তাদের এনসিপির সদস্য হিসেবে উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিভ্রান্তিকর। তিনি বলেন, “আমরা এই অপপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।”
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, সরকারে অংশগ্রহণ করা উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্ব করেই সেখানে গিয়েছিলেন, এখন তারা সরকারে থাকবেন কি না—সেটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রত্যাশা, গণঅভ্যুত্থানের বৈধতা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ছাত্র উপদেষ্টাসহ সকল উপদেষ্টা একযোগে কাজ করবেন।
নাহিদ ইসলাম শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সেনাবাহিনী সম্প্রতি যে ৬২৬ জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, সেটি তারা অনেক আগেই শুনে আসছিলেন। তিনি মন্তব্য করেন, “এই ঘটনা আসলে গত আগস্টের। যদি তালিকাটি তখনই প্রকাশ হতো, তাহলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি বা সন্দেহের সৃষ্টি হতো না এবং কেউ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগও পেত না।”
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, তা স্বীকার না করে উপায় নেই।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে, সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ১/১১’র ঘটনাও এর একটি উদাহরণ। এমন ঘটনাগুলো রাষ্ট্র, গণতন্ত্র কিংবা সেনাবাহিনী—কোনো কিছুর জন্যই ইতিবাচক ফল বয়ে আনেনি। তাই প্রত্যেককে নিজের দায়িত্ব পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, অতীতে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দলীয়করণে জড়িয়ে পড়েছে। আমলাতন্ত্র, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগও রয়েছে। নাহিদ ইসলাম বলেন, এখন সময় এসেছে এসব প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় এনে বিচার করার এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার। তার মতে, এসব প্রতিষ্ঠানকে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রত্যাশা।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গুমের অভিযোগ যেসব সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এখনও গ্রেপ্তার হননি। এদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য নেই, যা জনমনে আরও প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। তিনি মনে করেন, এসব বিষয়ে স্বচ্ছতা আনলে সেনাবাহিনী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জনগণের মধ্যে আরও দৃঢ় আস্থা অর্জন করতে পারবে। “আমরা চাই সেনাবাহিনী সেই আস্থার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হোক,”—বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।