বাগেরহাট নিউজ ২৪

বাগেরহাট নিউজ ২৪

অর্থপাচার মামলায় নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড



বাগেরহাট নিউজ ২৪ ডেস্ক
প্রকাশের সময় : মে ২৫, ২০২৫, ১০:১০ পূর্বাহ্ন /

বাগেরহাট নিউজ ২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থপাচার মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৫ মে) ঢাকার ৮ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন ।

রায়ে পাপিয়াকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় পাপিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন না; তার আইনজীবী অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সময় চেয়ে আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় ।

মামলার অন্য চার আসামি—পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর ও জুবায়ের আলম—অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন ।

২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয় ।

এর আগে, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর অস্ত্র মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল । পরে উচ্চ আদালত থেকে পাপিয়া জামিনে কারামুক্ত হন।

এই মামলায় সিআইডি ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাপিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে এবং ২০২২ সালের ২১ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয় ।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রহমান বলেন, “আদালত পাপিয়ার জামিন বাতিল করেছেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।”

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

সে সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ ডলার, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কিছু মুদ্রা এবং দুটি ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়।

পরে পাপিয়ার ফার্মগেটের ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০টি গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব। অভিযান চালানো হয় পাপিয়ার নরসিংদীর বাড়িতেও।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটির টাকার ওপরে।

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব। বিমানবন্দর থানায়ও তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। আর গুলশান থানায় মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে সিআইডি আরেকটি মামলা করে। পরে দুদক পাপিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে।

গুলশান থানার অর্থপাচার মামলায় পাপিয়াসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন।

এরপর ২০২২ সালের ২১ অগাস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রোববার রায় ঘোষণা করলেন বিচারক।

Explore More Districts