বেনাপোলে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালিত হয়েছে । অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল কোরান তেলোয়াত, এতিম শিশুদের মাঝে খাদ্য বিতরন,৭৭ টি কবুতর উড়িয়ে শুভ জন্মদিন এর শুভ সুচনা, কেক কাটা, শার্শার ১১ ইউনিয়ন এর দরিদ্র মানুষের মাঝে ৭৭ টি সেলাই মেশিন বিতরন, ত্যাগী নেতাদের উত্তরীয় পরিয়ে সন্মান জানানো ও আলোচনা সভা । বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৪ টার সময় বেনাপোল সোনালী ব্যাংক চত্বরে প্রধান অতিথি হিসাবে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বেনাপোল পৌর সভার সাবেক মেয়র বলেন,১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার বড় সন্তান শেখ হাসিন। বাংলাদেশের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। পরপর তিনবার এবং এ পর্যন্ত চারবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হয়ে সৃষ্টি করেছেন ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ পথ খুঁজে পেয়েছে তার সুযোগ্য নেতৃত্বে। তাই বাংলার মানুষ তাকে ভাবে ‘বাংলার উন্নয়নের বাতিঘর’ হিসেবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি, ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণসহ জাতীয় জীবনের বহু েেত্র অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রার স্বপ্নসারথিও তিনি।
শার্শা উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে বেনাপোল সোনালী ব্যাংক চত্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭ তম জন্মদিনে সভাপতিত্ব করেন শার্শা উপজেলা আওয়ামী মহিলালীগের সভাপতি খতিব আমেনা।
প্রধান অতিথি সাবেক বেনাপোল পৌর সভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, জাতির জনকের যোগ্য কন্যা আজ প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভুমির মানুষের জন্য মানান সই নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের আস্থা আমাদের বিশ্বাস আমাদের শক্তি আমাদের অনুপ্রেরনা আমাদের সাহাস আমাদের অর্জন আমাদের দৃড়তা ডিজিটাল বাংলাদেশ এর প্রবক্তা যার পরিশ্রমে বাংলাদেশের মানুষ স্বাদ পাচ্ছে তিনি হচ্ছেন আমাদের আজকের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির জনকের পরিবার এই বাঙালীকে যে ভালবাসা দিয়েছে এই বাঙালীর জন্য যে চিন্তা করেছে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন রাজনৈতিক পরিবার তা করে নাই। আজ বিএনপি কৃষককে সার এর জন্য গুলি করে হত্যা করেছে। অথচ ৮৬ টাকার সার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মাত্র ২৬ টাকায় কৃষককে যথা সময়ে দিয়েছে। ১৮ টাকার বিদ্যুৎ দিয়েছে মাত্র ৬ টাকায়। বছরের শুরুতে আমাদের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বিতরন করছে ৩৪ কোটি বই। সেখানে বিএনপি জামাত কে কোন দল করে তা বাদ বিচার করেন না। এ সুবিধা দল মত নির্বিশেষে সকলের ছেলে মেয়ে পেয়ে থাকে। আর সেই জামাত বিএনপির প্রেতাতœারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির জনককে নির্মম ভাবে হত্যা করে। বাংলাদেশের মাটিতে একটি মাত্র রাজনৈতিক পরিবার যে পরিবার মানুষের জন্য কাজ করে যায় সেই পরিবার হচ্ছে জাতির জনকের পরিবার।
তিনি আরো বলেন, আজ ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের বেতন ১২ হাজার টাকায় বৃদ্ধি করেছে। আজ তিনি শিক্ষকদের, বিধাবা, বয়স্ক নারী পুরুষদের জন্য চিন্তা করে বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি করেছে। বিএনপি মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। বাংলাদেশের সব থেকে বড় শক্তি বঙ্গবন্ধুর ভাষন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং জয় বাংলা শ্লোগান। সেই বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারন বন্ধ করে দিয়েছিল ২১ বছর। জয় বাঙলার শ্লোগান বন্ধ করে দিয়েছিল। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি বীরের জাতিতে পরিণত করার জন্য আজকে প্রধান মন্ত্রী সব কিছু সুন্দর ভাবে পরিচালনা করছেন। আর সেই বিএনপি আওয়ামীলীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দুর্নীতির কথা বলছে। আপনারা জানেন কে দুর্নীতি করেছে । ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির শাসন আমলে ৫ বার দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। তখন যে সংস্থা জরিপ করেছিল সেই সংস্থা আজও সোচ্চার। গত ১৫ বছরে আওয়ামীলীগের আমলে একবারও সেই সংস্থা পারেনি বাংলাদেশকে দুর্নীতে জড়িত করতে। এ সময় সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আবারও ২০২৪ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হবে। এসময় তিনি বলেন, আজ শার্শার যে সব আওয়ামীলীগ এর ত্যাগী নেতা কর্মীরা মামলা হামলার শিকার হয়ে বসে আছে, সেই সকল কর্মীদের আপনাদের কাছে দাবি তাদের হাতে তাদের আওয়ামীলীগ ফিরিয়ে দিবেন। আপনি জরিপ চালিয়ে দেখেন শার্শায় কিছু বিএনপি থেকে আসা হাইব্রীডরা আওয়ামলীগকে পরিচালনা করছে। আওয়ামীলীগের ত্যাগীদের নির্যাতন করছে। এবং প্রতিটি ইউনিয়নে রয়েছে ওই বিএনপি থেকে আসা সন্ত্রাসীরা।
তিনি বলেন নিজের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সাহসী কর্মকাÐ দিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে তার বিচণ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উঠতে যে শর্ত দরকার, তা পূরণ করায় আবেদন করার যোগ্য হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।
এর আগে সকাল ১০ টার সময় জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগ দলীয় কার্যালয়ে কোরান তেলোয়াত ও দোয়া অনুষ্টিত হয়েছে। আওয়ামীলীগের ৭৭ জন নেতা কর্মীদের হাতে ৭৭ টি কবুতর উড়িয়ে প্রধান মন্ত্রীর জন্মদিন এর শুভ সুচনা করেন। এরপর ৭৭ জন নির্যাতিত নেতা কর্মীকে উত্তরীয় পরিয়ে সন্মানিত করেন। এরপর আলোচনা শেষে ৭৭ পাউন্ড ওজনের কেক কাটেন। সর্বশেষ শার্শার ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার অসহায় পরিবারকে ৭৭ টি শেলাই মেশিন উপহার দেন।
এসময় বিশেষ অতিথি হিাসেব উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আহসান উল্লাহ মাষ্টার, শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফজলুল হক বকুল, প্রচার সম্পাদক ইলিয়াছ আযম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী, শার্শা উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, ৫ নং পুটখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার সরদার, ৮ নং বাগআচড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর খালেক, ৯ নং উলাশী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, ২ নং লক্ষনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনোয়ারা খাতুন, ৭ নং কায়বা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন, ১১ নং নিজামপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বিপুল। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সাধান গোস্বামী, উপজেলা যুবলীগ নেতা সাহেব আলী। উপস্থিত ছিলেন শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ কোরবান আলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শেখ সারোয়ার, কোষাধ্যাক্ষ খোদাবক্স, বেনাপোল ৯ নং ওযার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশাদুজ্জামান আশা আওয়ামীলীগ মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিউটি খাতুন, মলিলা নেত্রী শারমিন সুলতানা ,হালিমা খাতুন, প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক আজিবর রহমান।