৬ July ২০২৫ Sunday ১২:৩১:০১ PM | ![]() ![]() ![]() ![]() |
বিশেষ প্রতিনিধি:

বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হলেও বালু খেকো সিন্ডিকেট সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বরিশাল সদর উপজেলা সীমান্ত নদী ঝুনাহার এক কিলোমিটার এলাকায় রাতের আঁধারে চলছে বালু লুটের মহোৎসব।
উপজেলার চরবাড়িয়ানদীর মোহনায় প্রতি রাত ১০ টা থেকে শুরু করে ফজরের আযান পর্যান্ত ৮/১০ ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন করা হয় । প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকার বালু বিক্রি করছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট যাদের রয়েছে প্রশাসনের সাথে গভীর সখ্যতা। ফলে তারা প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।ঐসব বালু খেকোদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা।
জানা যায়, বরিশাল জেলার সদর উপজেলার ১ কিলোমিটার এলাকায় চলে অবৈধ ভাবে বালু বিক্রির মহাউৎসব।অভিযোগ রয়েছে, সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মোট্টা সবুজ, কাওছার সরদার, রুস্তুম সরদার, চান মিয়া, নাছিরের বিরুদ্ধে ।
আর পার্শ্ববর্তী মোহেন্দীগঞ্জ উপজেলা অংশেও একেই সময়ে চলে বালু উত্তোলন। এই বালুখেকোদের হাত থেকে রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টার সহযোগীতা কামনা করছেন নদীর তীরে বসবাসকারী অসহায় জনসাধারণ।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও একাধিক সুত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ও সায়েস্থাবাদ ইউনিয়নের ঝুনাহার নদীর মোহনা হতে ১ কিলোমিটার এলাকায় প্রতিদিনই রাত ১০টায় ঝুনাহার নদীতে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধভাবে বালু বিক্রির মহাতান্ডব চালায়। বলগেট বালু বোঝাই করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রথমে ঝুনাহার নদীর তীর ও তীর সংলগ্ন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে সারে ৪ হাজার থেকে ৭ হাজার ফুট স্টিলের ইঞ্জিনের বলগেটে বোঝাই করে। পরে ঝুনাহার নদী হয়ে কীর্তনখোলা নদীপথ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বরিশালসহ ঢাকায় সেই বালি পাঠায়।১ বছর আগে এই খবর পেয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হলে খবর পেয়ে পালিয়ে যায় বালু খেকোরা। রাতে তখন শুরু হয় প্রশাসনের সাথে তাদের চোর পুলিশ খেলা।আর প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে বলগেটসহ শ্রমিকদের আটক করলেও বালু খেকো স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বালুখেকোরা সিন্ডিকেট তৈরি করে পুলিশের নাম ভাংগিয়ে প্রতিফুট অবৈধ বালু থেকে ৫ টাকা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিফুট বালু থেকে ২ টাকা চাঁদা নিচ্ছে স্থানীয় একজন। এবিষয় জানতে চাইলে বালু খেকো কোম্পানীর এক কর্মকর্তা বলেন, ১৭ বছর না খাইয়া ছিলাম এখন কে জ্বালায় তাহা দেখে নিবো । এ ব্যাপারে গ্রামের সাত্তার খান বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত ঝুনাহার নদী থেকে অর্ধ শতাধিক বলগেট বোঝাই করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বালু বিক্রি করে কিছু সংখ্যক বালুখেকো। আর এতে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব এদিকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে এসব খেকোরা। তাদের বিরুদ্ধে প্রসাশন কখনোই জোরালো কোন পদক্ষেপ নেয়না।গ্রামবাসী বাধা দিয়েও বাড়িঘর রক্ষা করতে পারছিনা, প্রশাসন সঠিক ভাবে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে শতশত পরিবার বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। অবৈধ বালু উত্তোলনকারী প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক জানান, যাদুকাটা নদীতে বালু উত্তোলনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।উল্লেখ্য, ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু ১ বছরে অভিযান দেখা যায়নি- কিংবা নিয়মিত মামলাও হয়নি।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |