বরিশালে দুর্বৃত্তদের এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে গেছে ১৮ মাসের এক কন্যাশিশুর। সেইসাথে তার মা-বাবাও এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন। ধার নেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এসিড সন্ত্রাসের শিকার পরিবারের তিন সদস্যই বর্তমানে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল।
তিনি শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে। এর আগে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে বরিশাল সদর উপজেলার চর নেহালগঞ্জ এলাকার রশিদ হাওলাদারের বাড়িতে এসিড সন্ত্রাসের ওই ঘটনা ঘটে।
এসিডে মুখ ঝলসে যাওয়া রশিদ হাওলাদারের ছেলে দিনমজুর রিয়াজ হাওলাদার জানান, প্রতিবেশী ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই ফিরোজ ও মিরাজদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এছাড়া কয়েক বছর আগে লাখ টাকা ধার নেয় ফিরোজ ও মিরাজ। আর ওই পাওনা টাকাই চাইতে গেলে বিভিন্ন সময় নানান তালবাহানা ও হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো তারা।
রিয়াজ বলেন, আমি, আমার স্ত্রী খাদিজা বেগম এবং ১৮ মাসের শিশু সন্তান জান্নাতী ঘটনার সময় বিছানায় শোয়া ছিলাম। শুক্রবার রাত ৯ টার পরে হঠাৎ করে বসতঘরের জানালা দিয়ে তরল এসিড নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। ওইসময় চাচা খালেক হাওলাদারের ছেলে ফিরোজ-মিরাজের সাথে নিজাম ও নাসির ছিল বলে দাবি করছেন তিনি।
রিয়াজ বলেন, ‘তাদের ছোঁড়া এসিডে আমার স্ত্রীর শরীরের পেছনের অংশ এবং শিশু জান্নাতী ও আমার মুখসহ বেশ কিছু অংশ পুড়ে ফোসকা পড়ে গেছে। পরে স্থানীয়রা আমাদের রাতেই বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।’
রিয়াজের স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন, ‘টাকা-পয়সা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধ থাকলে আমাদের সাথে আছে কিন্তু অবুঝ শিশু সন্তানটি কি দোষ করেছে। ওর গায়ে এসিড নিক্ষেপ করার কি দরকার ছিল। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া না হলেও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসিড নিক্ষেপের সত্যতা পেয়েছে। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের অভিযান চালাচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছে।