বরিশালে বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিল, অভিযোগ জানিয়েও মিলছে না প্রতিকার

বরিশালে বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিল, অভিযোগ জানিয়েও মিলছে না প্রতিকার

২৯ June ২০২৫ Sunday ৯:০২:৩০ PM

Print this E-mail this


নগর প্রতিনিধি:

বরিশালে বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিল, অভিযোগ জানিয়েও মিলছে না প্রতিকার

নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বরিশাল ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো ২) অফিস ও তাদের মিটার রিডিং কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিলে আকাশ-পাতাল গরমিল, মিটার ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ গ্রাহকদের। এসব অনিয়ম যেন এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এই বিদ্যুৎ বিভাগ মিটার না দেখেই ইচ্ছে মত বিল করছে। এতে ২০০ থেকে ৫০০ ইউনিট পর্যন্ত গরমিল দেখা গেছে বিলের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের। এমন ভূতুড়ে বিলের বোঝা ও বিদ্যুৎ বিভাগের বেপরোয়া অসহায় গ্রাহকরা।

জানা গেছে, প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক বিলের অভিযোগ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যাচ্ছেন। ভূতুড়ে বিলে নিয়ে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মতো করে গ্রাহককে বুঝাচ্ছেন। তাদের কথা বুঝলে ভালো,না বুঝলে কিছুই করার নেই বলে ভুক্তভোগীদের বিদায় দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রায়শ গ্রাহকের সঙ্গে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাগবিতণ্ডা হচ্ছে।

ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের ভুক্তভোগী সোহেল রানা বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছি। তারপরেও বাড়তি ১৮৫ ইউনিটের ২৩৮৬ টাকার বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন দুর্নীতি করতে এমন হয়রানিতে ফেলেছেন।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, মিটার রিডিংয়ের গরমিল রয়েছে বিলের কাগজের সঙ্গে। বিল পরিশোধ করার পরেও উল্টো বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন অন্যায়ভাবে ভুয়া বিল এবং তারা যা ইচ্ছে তাই করছেন। প্রতিকার চাওয়ার জায়গা নেই।

ভুক্তভোগী সজিব বলেন, বিদ্যুৎ বিলের কাগজের সাথে মিটার রিডিংয়ের সাথে কোনো মিল নেই। এখনও বিদ্যুৎ অফিসের কাছে কিছু ইউনিটের বেশি পাওনা রয়েছি। অথচ আমাকেও ভুয়া বিল ধরিয়ে দিয়েছেন। এর বিচার কোথায় দিব, বিদ্যুৎ অফিসে প্রতিকার চাইলে তারা বলে বিল পরিশোধ করতেই হবে, না হলে লাইন কাটা হবে।

আরেক ভুক্তভোগী আলতাফ হোসেন বলেন, রিডিংম্যানরা কখনোই মিটার দেখে বিল করে না। ঘরে বসে মনগড়া ইউনিট বসিয়ে বিল করে। যার খেসারত আমরা দিচ্ছি। তাছাড়াও মিটার বাণিজ্য তো করছেই। এই বিদ্যুৎ অফিস দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। আমাদের দাবি এই ভুয়া বিল থেকে মুক্ত করা হোক।

বরিশাল ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো ২) নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকৌশলী মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, মিটার রিডার নতুন তাই এমন হতে পারে। অফিসে আসলে আমরা বিষয়টি সমাধান করে দেব।’

বরিশাল ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) পরিচালন ও সংরক্ষন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পরিতোষ চন্দ্র সরকার বলেন- এমনটা হওয়া উচিত নয়। অবশ্যই মিটারের রিডিংয়ের সাথে মিল রেখে বিদ্যুৎ বিল প্রস্তুত করতে হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের দ্বারা গ্রাহকদের ভোগান্তি দেয়া দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এ বিষয়ে ওজোপাডিকো উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করছেন সাধারণ গ্রাহকরা। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ বিভাগকে দূর্নীতি মুক্ত রাখতে যে সকল কার্যক্রম চালু করেছে তা এ সকল অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে সম্ভব হচ্ছেনা। তাই এ সকল কর্মকর্তাদের সকল কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন গ্রাহকরা।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts