১৯ June ২০২৫ Thursday ৬:৫৯:৪৪ PM | ![]() ![]() ![]() ![]() |
বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। জেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। ইতোমধ্যে গত দুই মাসে বরগুনায় ডেঙ্গুতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০ জন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৮৭ জন রোগী। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (১৮ জুন) পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১০৫ জনে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন ৫ জন। বাকিরা চিকিৎসা নিতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মারা যান।
২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ এতটাই বেড়েছে যে, হাসপাতালের বারান্দা, করিডোর ও মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে। চিকিৎসকদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন গড়ে ৫০-৬০ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী।
চিকিৎসক সংকট আরও পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। বরগুনায় অতিরিক্ত ১০ জন চিকিৎসক ও ১০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত যোগ দিয়েছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক এবং ১ জন নার্স।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. আশিকুর রহমান বলেন, “অনেক রোগী ভর্তি যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও আতঙ্কে হাসপাতালে চলে আসছেন। ফলে চাপ বেড়ে যাচ্ছে। এক দিনের জ্বরেও অনেকে ভর্তি হচ্ছেন।”
অন্যদিকে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, “রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে সবাইকে বলা হচ্ছে জ্বর হলেই যেন আতঙ্কিত না হন। জটিল উপসর্গ দেখা দিলে তবেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া উচিত।”
এ বছর বরগুনা জেলার হাসপাতালগুলো থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৮৮৮ জন। এর মধ্যে শুধু বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল থেকেই বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৭৫৬ জন।
পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার শঙ্কায় বরগুনায় ডেঙ্গু সংক্রমণের উৎস ও বিস্তারের কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, জনসচেতনতা এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ ছাড়া এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |