চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আসা তিন কন্টেনারে ৬০ হাজার ৪৮০ কেজি আমদানি নিষিদ্ধ ঘন চিনি (সোডিয়াম সাইক্লামেট) জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ চালান আটক করা হয়েছে বলে গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানীর মতিঝিল জীবন বীমা ভবনের এইচপি ইন্টারন্যাশনাল সোডা অ্যাশ লাইট ঘোষণায় চীন থেকে গত ১৬ আগস্ট চালানটি আমদানি করে। চালানটি খালাসের জন্য উত্তর কাট্টলীর সিটি গেটের গোল্ডেন কন্টেনার ডিপোতে আনা হয়। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম কাস্টমস কন্টেনারগুলোর খালাস কার্যক্রম স্থগিত করে। ১৬ সেপ্টেম্বর কাস্টম গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, ডিপো কর্তৃপক্ষ এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া পণ্যের নমুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানো প্রযুক্তি সেন্টার, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব এবং কাস্টম হাউসের ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তিনটি ল্যাবের পরীক্ষাতেই ওই পণ্য ঘন চিনি বা সোডিয়াম সাইক্লামেট বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ঘন চিনি একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক, যা সাধারণ চিনির চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকলেট, কনডেন্সড মিল্ক এবং শিশু খাদ্য তৈরিতে সাধারণ চিনির পরিবর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ক্ষতিকারক কৃত্রিম উপাদানটি ব্যবহার করে। ঘন চিনি দিয়ে তৈরি খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘন চিনির দ্বারা প্রস্তুতকৃত খাদ্য ক্যানসারসহ কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে। ঘন চিনির অপব্যবহার রোধকল্পে সরকার পণ্যটিকে আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১–২০২৪ এর আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় ঘন চিনি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ–কমিশনার এইচ এম কবির বলেন, কাস্টমস আইন ২০২৩ এর বিধান অনুযায়ী ঘন চিনির চালানটি আটক করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। জব্দকৃত ঘন চিনির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ২ কোটি টাকা। এছাড়া পণ্যের শুল্কহার ৬১ দশমিক ৮০ শতাংশ।