শেরপুর (বগুড়া) সংবাদদাতা
বগুড়ার শেরপুরে ষোল মাস বয়সী এক কন্যা শিশুকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছে জাকির হোসেন (৩৬) নামের এক পাষন্ড বাবা। লাশ উদ্ধারের পর ঘাতককে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়। নিহতের পরিবার বলছে, মেয়েকে পুকুরে দিলে ধনসম্পদ পাওয়া যাবে এমন স্বপ্ন দেখে জাকির এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে পর পর দু’টি কন্যা সন্তান হওয়ায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা। জাকির হোসেন ওই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে। আর নিহত শিশুর নাম হুমায়রা খাতুন।
জানা গেছে, গত সাত বছর আগে জাকিরের সঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের নামা সিংড়াপাড়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। এক বছরের মাথায় একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম জান্নাতি খাতুন। বর্তমানে বয়স ছয় বছর। এরপর বাবা জাকিরের প্রত্যাশা ছিল ছেলে সন্তানের। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হয়।
নিহতের দাদী সালেহা বিবি জানান, পরিবারের অনেকেই মাঝে মধ্যেই স্বপ্নে দেখতেন তাদের পরিবার থেকে কোন বাচ্চা পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। যে কারণে তারা পুকুরে একাধিকবার দুধ ঢেলেছেন এবং চাল দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জাকিরের সাথেও তিনি আলোচনা করেছেন। এরপরেই এরকম ঘটনা ঘটলো।
নিহত শিশুটির মা রাবেয়া খাতুন বলেন, মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার মেয়ে হুমায়রা খাটের ওপর নেই। মেয়ের বাবাকে ফোন দেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। এরপর সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে সকালে স্বামী মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করে পুকুরে লাশের সন্ধান দেয়। রাবেয়া আরো বলেন, তার স্বামী মাঝে মধ্যে স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্নে তার স্বামীর কাছ থেকে তাদের বড় মেয়ে জান্নাতিকে চাইতো। বিনিমেয়ে টাকা দেয়ার লোভ দেখাতো। তাকে সোনা-দানা দেবে যার বিনিময়ে ও আমার বাচ্চাকে রেখে আসছে।
বগুড়া শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, পরপর দুটি কন্যা সন্তান হওয়ার কারণে জাকির অসন্তুষ্ট ছিলেন। এ কারণে তার ছোট কন্যাকে ঘুমন্ত অবস্থায় উঠিয়ে পঁচা ডোবায় হত্যা করে। এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা আসামীকে আদালতে প্রেরণ করে রিমান্ডের আবেদন করবো।