বাউল সম্রাট ফজির লালন শাহয়ের সর্ব পরিচয় তাঁর গানে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, লালন ফকিরের সর্ব পরিচয় তাঁর গানে। আমরা লালন ফকিরকে আমাদের মনের মনিকোঠায় ঠাঁই দিয়েছি তাঁর সৃষ্ট অসাধারণ সব মরমী সংগীতের জন্য। কারন, তাঁর রচিত ও সুরারোপিত এ সকল অসাধারণ দার্শনিক ভাবপূর্ণ গান আমাদের চিন্তাজগতে উথাল পাথাল ঢেউ তোলে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ঘোড়ামারা-ভেড়ামারা গ্রামের হেমাশ্রমে গুরু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষকে বিভক্তির বেড়াজালে না জড়িয়ে শুধু মানুষ হিসেবে দেখার কারণেই হয়ত তিনি মানুষ কে গুরুভাবে ভজতে বলেছেন। কারণ, তাতেই লুকায়িত আছে শাশ্বত প্রেমের অমিয়ধারা- মানবমুক্তি যার ফল। কলিযুগে তিনি মানুষকে দেখেছেন অবতার হিসেবে।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, ‘এই সাধুসঙ্গ হওয়া খুব জরুরি, না হলে এটি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এগুলো বুঝতেই পারবে না। তাই এমন আয়োজন খুব প্রয়োজনীয়।’
‘এসো হে অপারের কাণ্ডারি, আর কি বসবো এমন সাধ বাজারে’—লালন সাঁইজির এই আধ্যাত্মিক বাণীকে প্রতিপাদ্য করে আত্মশুদ্ধি, জ্ঞানযোগ ও গুরু কর্মের মধ্য দিয়ে আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় লালনভক্ত রওশন ফকিরের আস্তানায় এ সাধুসঙ্গের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে ফরিদা আখতার বলেন, ‘রওশন ফকিরের ধামে প্রতিবছরের মতো এই সময়ে বার্ষিক সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। রওশন ফকির লালন শাহের ভক্ত, আমিও লালন শাহের ভক্ত, তাই ওনার সঙ্গে আছি। এখানে যাঁরা আছেন, তাঁরা বিশেষ এক জীবনযাপন করেন—সব লোভ-লালসা পরিত্যাগ করে শান্তির জীবনযাপন করেন, মানবতার ধর্ম প্রচার করেন। সাদা পোশাক সাধনার প্রতীক, এই পোশাকের মধ্য দিয়েই সবকিছু বিসর্জন দিয়ে তাঁরা সাধনায় মগ্ন হন। আমি তাঁদের সবাইকে শ্রদ্ধা করি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক, চিন্তক ও কলামিস্ট ফরহাদ মজহার, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী, দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা প্রমুখ।