ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পৌর শহরের পুরাতন ডাকবাংলো এলাকায় বসেছে খাজনামুক্ত সাপ্তাহিক নতুন হাট-বাজার। নতুন এই হাট বাজারে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সবধরনের পণ্যের দোকান বসেছে। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সমাগম ঘটছে এ বাজারে। স্থানীয়দের মতে এ যে গ্রামীণ জনপদে পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে এসেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীদের অস্থায়ীভাবে নিয়ে বসা কাঁচামাল, মাছ, গরুর মাংস, সবজি, পান-সুপারি ও গৃহপালিত পশুপাখি বেচাকেনা জমে উঠেছে।
নতুন হাট-বাজার বসেছে শুনে এলাকার লোকজনের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে নতুন বাজার দেখতে আসা লোকজনের ভিড় জমেছে।
বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম জানতে চাইলে উপজেলার রাজাপুরের কৃষক শাহ আলম,পূর্ব চন্দ্রপুরের শহীদ উল্যাহ, আবদুল মালেক, পৌর এলাকার অভিরামপুরের সুমন চন্দ্র ভৌমিক, জগতপুরের কৃষক আহমেদ করিম চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বড় দারোগার হাট থেকে আসা কৃষক সাহাব উদ্দিন, কুমিল্লার নিমশাহের কৃষক জাহাঙ্গীর, লাঙ্গল কোর্টের জসিম, বক্সগঞ্জের লোকমান, চৌদ্দগ্রামের রফিক, সেনবাগের নেজাম, কোম্পানিগঞ্জের আলাউদ্দিন, ফেনীর পাঁচগাছিয়ার মো. রিফাত, মোহাম্মদ মামুনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাঁচামরিচ কেজি ৫০ টাকা, টমেটো ৫৫, গাজর ৫০, ফুলকপি ৫০, বাঁধাকপি ৩০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন। উৎসবমুখর পরিবেশে বেচা বিক্রি হচ্ছে।
পৌর এলাকার শ্রীধরপুরের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন, বড় পেঁয়াজ ১২০ ও মাঝারি পেঁয়াজ ৬০ টাকা, নতুন আলু ৫৫ ও পুরাতন আলু ৪০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন।
মাছ বিক্রেতা মো. ফারুক বলেন, বড় রুই মাছ ২৩০, পাবদা ৩২০, কোরাল ৫৫০, শিং মাছ ২৫০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন।
গরুর মাংস বিক্রেতা জানায়, দুইটা গরু সকালের দিকে বিক্রির জন্য জবাই করা হয়েছে। ৩ ঘণ্টার মধ্যে মাংস বিক্রি হয়ে গেছে। এভাবে চাহিদা থাকলে আগামীতে আরও ১ থেকে ২টা বেশি জবাই করব। ৬৫০ টাকা ধরে বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি কেজি মাংস।
দাগনভূঞা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ইফতেখার সিবলু বলেন, পৌরসভা ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়ে সপ্তাহে ২ দিন (শনি-মঙ্গলবার) হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় একটি মহল সিন্ডিকেট করে প্রকৃত কৃষকদের আগে হাটে বসতে দিত না। সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য এবং প্রান্তিক কৃষকরা যেন তাদের কৃষি পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারে একারণে মূলত এ হাট বসানো। হাটে কোনো দোকানিকে দিতে হচ্ছে খাজনা। এ হাট সম্পূর্ণ খাজনামুক্ত। শুরুতেই ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের উৎসাহ ও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
পৌরসভার মেয়র ওমর ফারুক খাঁন জানান, প্রান্তিক কৃষকদের কথা চিন্তা করে সপ্তাহে ২ দিন (শনি-মঙ্গলবার) এ হাট বসানো হয়েছে। কৃষকরা যেন তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারে এবং ক্রেতারা যেন টাটকা তরতাজা শাকসবজি, মাছ মাংসসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনী খাদ্যদ্রব্য স্বল্পমূল্যে কিনতে পারে এসব কিছু চিন্তা করে মূলতঃ এ হাট বসানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের চাহিদা বাড়লে এ হাট অব্যাহত থাকবে এবং আগামীতে পৌর এলাকায় জায়গায় কিনে স্থায়ীভাবে এ হাট বসানোর চিন্তা ভাবনা আছে।