আমিনুল ইসলাম, তাহিরপুর
তাহিরপুরে সমলয় পদ্ধতিতে বোর ধান চাষাবাদে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। তাহিরপুর উপজেলায় সমলয় পদ্ধতিতে (চাষাবাদে পুরোপুরিভাবে যন্ত্রের ব্যবহার করা) বোরো জমিতে ধানের ফলন বেড়ে গেছে দেড়গুণেরও বেশি। বোরো ধান চাষে এ রকম পদ্ধতি বের করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এর নাম দিয়েছেন সমলয় চাষাবাদ। ফলন ভালো হওয়ায় এ পদ্ধতির দিকে কৃষকরাও আগ্রহী হয়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস জানিয়েছে, সমলয় পদ্ধতিতে তাহিরপুর উপজেলায় ৫০ একর জমিতে এ বছর বোরো চাষ করা হয়েছিল। প্রতি কিয়ার জমিতে (৩০ শতকে এক কিয়ার) জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে ২২ থেকে ২৫ মণ, যেখানে চলমান প্রক্রিয়ায় ধান হতো ১২ থেকে ১৫ মণ।
বুধবার তাহিরপুর উপজেলায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা ৩ একর বোরো জমির ধান কাটা হয়েছে। কম্বাইন্ড হারভেস্টার (ধান কাটা ও মাড়াই করার যন্ত্র) দিয়ে জমি থেকে ধান কাটা হয়।
এ সময় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রায়হান কবির, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাসান-উদ-দৌলা,সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের উত্তর মুকসেদপুর গ্রামে ৫০ একর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ করে। শুরুতে জমির অনুপাতে হাইব্রিড জাতের ধানের বীজতলা তৈরি করা হয় ট্রেতে। পৌষ মাসের মাঝামাঝি থেকে মাঘ মাসের এক সপ্তাহ পর্যন্ত জমি তৈরি, প্রয়োজনীয় সেচ কাজ ও রোপণের কাজ সম্পন্ন হয়। চাষাবাদ হয় কলের লাঙ্গলে এবং ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করা হয়। প্রকল্পটির আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়েছিল উপজেলা কৃষি অফিস।
উত্তর মুকসেদপুর গ্রামের কৃষক কাছম আলী বলেন, চলমান পদ্ধতির তুলনায় সমলয় পদ্ধতির জমিতে দেড়গুণের বেশি ফলন হয়েছে। প্রায় ১০২ জন কৃষক সরকারি সহায়তায় এ পদ্ধতিতে চাষ করেছিলেন। ভালো ফলন হওয়ায় আরও অনেক কৃষক আগ্রহী হয়েছেন। আগামীতে তারা সরকারি সহায়তা না পেলেও চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একই কথা জানালেন, উত্তর মুকসেদপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও মতি মিয়া।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাসান-উদ-দৌলা বলেন, তাহিরপুর উপজেলার উত্তর মুকসেদপুর হাওরে সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা জমিতে প্রতি কিয়ার জমিতে ফলন হয়েছে ২২ থেকে ২৫ মণ করে।
