চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ছোট একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন এবং ১০–১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ও পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের দুটি পরিবারের মধ্যে পূর্বের একটি ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দিনের শুরুতে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও বিকেলে বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনেরগাঁও এলাকার কয়েকজন লোক শাশিয়ালি এলাকায় গিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের মদনেরগাঁও এলাকার আবুল হাসেমের ছেলে ইব্রাহিম (১৭) পারিবারিক অভিমানে বাড়ি ছেড়ে জামতলা এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারেন, ইব্রাহিম তার বন্ধু মাহাদির বাড়িতে অবস্থান করছে।
রোববার গভীর রাতে ইব্রাহিমের মামা রাশেদ ও তার আত্মীয়রা জামতলায় গিয়ে মাহাদির বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। ভোরের আজানের পর তারা মাহাদিদের ঘরে ডাকাডাকি শুরু করেন। এসময় মাহাদিদের আত্মীয় রবিউল চিৎকার করে চোর বলে অভিযোগ করেন। এর পরই বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়।
রাশেদের ভাষ্য অনুযায়ী, মাহাদি ইব্রাহিমকে ঘরের লাকড়ির ঘরে লুকিয়ে রাখে। তাঁরা ইব্রাহিমের খোঁজ নিতে চাইলে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজান ও বিএনপি নেতা আব্দুল হান্নান ঘটনাটি সমাধানের জন্য বৈঠকের উদ্যোগ নেন।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মদনেরগাঁও এলাকার এক থেকে দেড় শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রসহ মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা যোগে শাশিয়ালি এলাকায় আসে। শাশিয়ালি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারা হামলা চালিয়ে তাণ্ডব চালায়। এরপর এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
মদনেরগাঁও এলাকার সাজিদ পাটওয়ারী জানান, তাঁর এলাকার ইব্রাহিমের পরিবারের সদস্যদের মারধরের খবরে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে শাশিয়ালি এলাকার বাসিন্দারা তাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
এসময় রাকিব গাজী, শরীফ পাটওয়ারী, সুজন বেপারী, তামিমসহ অন্তত ৮–১০ জন আহত হন। তাঁদের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলায় অন্তত ৮–১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
শাশিয়ালি এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে রবিউলের ওপর হামলার পাশাপাশি তাঁকেও মারধর করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী রুনু বেগমও হামলার শিকার হয়েছেন। হামলাকারীরা এলাকার মসজিদে গিয়েও মোয়াজ্জেম আব্দুল হান্নানের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই কফিল উদ্দিন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার তদন্ত চলছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১৬ জুন ২০২৫