মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, র্যাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এটার ব্যাপারে আমরা একটা প্রপোজাল পাঠিয়েছি, মানে একটা আইডিয়া দেওয়া হয়েছে। একটা নামের। আগামী সভায় এটা নিয়ে একটু চিন্তাভাবনা করতে হবে।
নাম পরিবর্তন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী সভায় এটা সিদ্ধান্ত হবে।
সিদ্ধান্তটা আসলে কি। নতুন করে গঠন? উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, হ্যাঁ, এটা দরকার হলে নতুন করে গঠন করা হবে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আগে নানা অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিশেষায়িত এ বাহিনীর বিরুদ্ধে। গুমসংক্রান্ত ঘটনা তদন্তে সরকার গঠিত কমিশনে গত দেড় মাসে ১ হাজার ছয়শর বেশি অভিযোগ জমা পড়ে র্যাবের বিরুদ্ধে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অকাতরে মানুষ হত্যার প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাতে কালো পোশাকের এ বাহিনী।
গুম কমিশনের কাছে যে অভিযোগগুলো এসেছে তারমধ্যে ৩৮৩টি অভিযোগ যাচাই করে দেখা গেছে ১৭২টি অভিযোগই র্যাবের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনে র্যাবের সম্পৃক্ততা দৃশ্যমান হলে দেশ-বিদেশে আলোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনার দায় স্বীকারও করেছে বাহিনী। এ হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারগুলোর কাছে দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনাও করে র্যাব।
র্যাবের বন্দিশালারও খোঁজ পাওয়া গেছে, যেখানে বছরের পর বছর গুম হওয়া ব্যক্তিদের রেখে নির্যাতন করা হতো।
তাছাড়া এ বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গত ১৬ বছরে এই বাহিনীর কতিপয় শীর্ষ কর্মকর্তারা নানারকম বর্বরতা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার ক্রসফায়ারের জন্য ব্যবহার করেছে দীর্ঘ সময়।
গণ অভ্যুত্থানে পতিত সরকারের আমলে ধারাবাহিকভাবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হত্যা, ক্রসফায়ার, গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে র্যাবের বিরুদ্ধে। সংস্থাটিকে বিলুপ্তির দাবিও করা হয়। বিএনপির চেয়ারপাসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও র্যাবকে বিলুপ্ত করার দাবি করেছিলেন।
গত জুলাই অভ্যুত্থানের সময় র্যাবের হেলিকপ্টার থেকে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ মেলে। এছাড়া আরও নানা অভিযোগে সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের প্রতিবেদনেও র্যাবকে বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়।