সিলেটে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সানতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শেষ হচ্ছে। ইতিমধ্যে নগরীর সুরমাপারের চাঁদনীঘাটে বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
প্রতি বছর পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে চাঁদনীঘাটেই বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। এবারও তাই হচ্ছে।
চাঁদনীঘাটে বিসর্জন মঞ্চ তৈরি হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও সিলেটের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ উপলক্ষ্যে সনতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানাতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার বিকেল থেকে সিলেটে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। মহানগরীর চাঁদনীঘাটে উদ্বোধন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও নবনির্বাচিত মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আরিফুল হক বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নগরী সিলেটে সব ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান সেই প্রাচীনকাল থেকে। আমরা সবাই পরস্পরের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধর্মকর্মের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল। আমাদের সম্প্রীতির এই বন্ধন সবসময় অটুট থাকবে।
এদিকে বিকেল ৪টার পর থেকে নগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ থেকে ঢাকঢোল বাজিয়ে নেচেগেয়ে ট্রাকে প্রতিমা নিয়ে ভক্তরা সুরমাপারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। বিকেল সোয়া পাঁচটা পর্যন্ত অন্তত প্রায় শ’খানেক ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সুরমাপারে জড়ো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
চাঁদনীঘাটে কেবল সিলেট মহানগর এলাকারই নয়, শহরতলী ও আশপাশ এলাকার এলাকার অনেক মণ্ডপ থেকে বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে আসা হয়।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। হিন্দু পূরাণমতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবিকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দিনপঞ্জিকা অনুসারে এ বছর দুর্গাদেবী স্বামীর ঘর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যে পিতৃগৃহে পদার্পণ করছেন ঘোটকে চড়ে। দুর্গাদেবী ভক্তদের কাঁদিয়ে ঘোটকে চড়ে মর্ত্যলোক ছেড়ে চলে গেলেন কৈলাসে।
কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
এবার সিলেট জেলার ৬১৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে সার্বজনীন ৫৬৯টি, পারিবারিক ৪৮টি পূজোর আয়োজন হবে। মহানগরীতে ১৫১টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ১৩৪টি ও পারিবারিক ১৭টি। জেলায় ৪৬৬টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ৪৩৫টি ও পারিবারিক ৩১টি।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন