বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সিলেট-২ আসনে জামায়াত মনোনিত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল হান্নান বলেছেন, ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার পরে আমরা আশা করেছিলাম এই সরকার জনগণের সরকার, জনগণের কাজ করবে। আমরা এখন কি দেখছি? জামায়াতে ইসলামী বাধ্য হয়ে, সব দল বাধ্য হয়ে এখন রাস্তায় নামতে হচ্ছে। যারা প্রাণের বিনিময়ে এই দেশকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিলো, এই জুলাই বিপ্লবের শহীদদের আইনী ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে না। হাজার হাজার আহত ভাইবোনেরা আহত হয়ে কাতরাচ্ছে, তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত করা হচ্ছে না। তাদের চিকিৎসার জন্য এই সরকারকে আমরা হুশিয়ার করে দিতে চাই, জুলাই বিপ্লবের আনুষ্ঠানিক আইনি ঘোষণা ও পিআর পদ্ধতি ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। জামায়াতে ইসলামী ও অপরাপর রাজনৈতিক দল সবাই বুঝতে পেরেছে, এদেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলেই স্বৈরাচার বিদায় হবে। অতএব, এই সরকারও এখন ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারকে হুশিয়ার করে দিতে চাই, ফাঁদে পা দিবেন না। আমরা এখনও বিশ্বাস করি, এই সরকার বাংলাদেশের আটারো কোটি মানুষের সরকার। আপনারা জনগণের কাতারে আসুন। জনগণের ভাষা বুঝার চেষ্টা করুন।’
অধ্যাপক আব্দুল হান্নান আরও বলেন, ‘আমরা সব সময় বলে আসছি, নির্বাচন হবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে। সবার জন্য সমান হবে। এ জন্য যে সংস্কার করার প্রয়োজন ছিল, সেগুলো এখনও হচ্ছে না। জামায়াতে ইসলামী সব দলকে নিয়ে আটারো কোটি মানুষকে নিয়ে ৫ দফা দাবি আদায় করে ছাড়বে। দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। আমরা সংগ্রাম করতে রাজী আছি। সংগ্রামের মাধ্যমেই স্বৈরাচারকে বিদায় করবো। আজ সারা দেশব্যাপী সরকারকে যে লালকার্ড দেখানো হলো, এতে আপনারা সাবধান হয়ে যান। আমাদের যেন আবার সংগ্রাম করতে না হয়। আবার যদি সংগ্রামের ডাক দিতে হয়, তাহলে আপনাদের দশা কি হবে আমরা বুঝতে পারছি না।’
সংগঠনটির কেন্দ্র ঘোষিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা-এই ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর জামায়াত আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় উপজেলা ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এই বিক্ষোভ সমাবেশ।
পরে, পৌরশহরের প্রধান সড়কে অনুষ্ঠিত হয় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে বিশাল মিছিল।
উপজেলা জামায়াতের আমীর নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সেক্রেটারি মতিউর রহমান ও পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি জাহেদুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের অফিস সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম, সিলেট পশ্চিম জেলা ছাত্র শিবিরের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক আহমদ হামিম।
আর বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাস্টার ইমাদ উদ্দিন, পৌর জামায়াতের আমীর এইচএম আক্তার ফারুক ও নায়েবে আমীর আব্দুস সোবহান প্রমুখ।