পলিথিনবিরোধী
ডায়ালগে তথ্য
স্টাফ রিপোর্টার ঃ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তন-খুলনা আয়োজিত পলিথিন বন্ধে করণীয় নিয়ে সচেতনতা বিষয়ক ডায়ালগে বক্তারা বলেছেন, দেশে ১২’র উপরে পলিথিন তৈরির কারখানা রয়েছে। অথচ পলিথিনের বিকল্প চটের ব্যাগ তৈরি করে বাজারজাত করা গেলে দেশের ২৬টি পাটকল বন্ধের প্রয়োজন হতো না, বরং ৫৬টি পাটকল তৈরির প্রয়োজন হতো। এজন্য সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে পলিথিনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। বিশেষ করে ম্যান্ডেটরী প্যাকেজিং এ্যাক্ট এবং পলিথিন বিরোধী আইন কার্যকরের মধ্যদিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন। ডায়ালগে উল্লেখ করা হয়, দেশের ১২শ’ কারখানা বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ পাটকল চালুই পারে পলিথিনের বিকল্প ব্যবহারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর দৌলতপুরস্থ ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অফিস মিলনায়তনে এ ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়।
আমেরিকান কর্নার এর সহযোগিতায় পরিবর্তনের এ ডায়ালগে পলিথিন বা প্লাষ্টিক জাতীয় পণ্যের মোড়ক যত্রতত্র ফেলে পরিবেশ বিপর্যয় বা ড্রেন বন্ধ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না করে এজন্যও কোম্পানীগুলোর পক্ষ থেকে ‘প্যাকেট ফেরতে অর্থ প্রদান’ কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
খুলনা সিএসও’র সভাপতি মিনা আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং পরিবর্তন-খুলনার নির্বাহী পরিচালক এম. নাজমুল আজম ডেভিডের সঞ্চালনায় এসময় পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের ফরেষ্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো: ওয়াসিউল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড: আ. ফ. ম. মহসিন, কেসিসির ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মাদ আলী, কৃষক লীগ নেতা শ্যামল সিংহ রায়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: ওয়াহিদ-বিন হাবিব, কৃষি মার্কেটিং অফিসার শাহরিয়ার আকুঞ্জি, পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সভাপতি এ্যাড: কুদরত ই-খুদা, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ-জামান, মাসাসের প্রধান নির্বাহী এড. শামিমা সুলতানা শীলু, শেখ মফিজুর রহমান, ড: সাইফুল ইসলাম, মো: নান্নু মোড়ল, আমেরিকান কর্নারের ফারজানা রহমান, বেলার মাহাফুজুর রহমান মুকুল, হিউম্যানিটি ওয়াচের শরিফুল ইসলাম সেলিম, লোকজের পলাশ দাশ, উদ্ভাবনী মহিলা সংস্থার মারিয়া ভূইয়া মেরী, শুভশক্তির ঝর্না আক্তার বৃষ্টি, সুসমাজের শরিফ শাকিল বিন আলম, জাগো’র শেখ আল মুকিত আনতন, প্রধান শিক্ষক রুখসানা নাছরিন, পরিবর্তন খুলনার সভাপতি অজন্তা দাস, রেশমা আক্তার, সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামানবুলু, আবু হেনা মোস্তফা জামাল পপলু, মহেন্দ্র নাথ সেন, এইচ. এম. আলাউদ্দিন, দিপঙ্কর রায়, রাজিব ইসলাম, শামিম আশরাফ শেলী, খলিলুর রহমান সুমন প্রমুখ।
ডায়ালগে জানানো হয়, বর্তমান শতাব্দীতে আমাদের স্বাস্থ্যকর অস্তিত্বের হুমকির আরেক নাম প্লাস্টিক দূষণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের প্রচলন মানব জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে। কিন্তু এই প্লাস্টিক পণ্যটি কখনও দ্রবীভূত হয়না বলে এর দূষণ জন্ম দিয়েছে গভীর উদ্বেগের। করোনাকালে অনলাইন শপিং ও অনলাইন ফুড ডেলিভারিতে ব্যবহৃত নানা রকমের প্লাস্টিকের মোড়ক, ওয়ানটাইম চামচ, গ্লাস ইত্যাদি প্লাস্টিক দূষণের গতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর এ দূষণ পরিবেশ, জীববৈচিত্র, অর্থনীতি ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য এক বিরাট হুমকি। পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তুলতে এক্ষণি সময় প্লাস্টিক দূষণের লাগাম টানার।
এসময় পলিথিন বন্ধের পাশাপাশি বিকল্প কিছু ইতিবাচক পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, স্বল্পমূল্যে অথবা বিনামূল্যে জনগণকে ‘ক্যারিব্যাগ’ সরবরাহ কর, কাগজের ব্যাগ বা ঠোঙ্গা ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা, পুরাণ কাপড় বা চটের পূণর্ব্যবহার বাড়ানো, অবিলম্বে দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ পলিথিন কারখানা বন্ধ করা যেতে পারে।