পলাশে অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি
নরসিংদীর পলাশ উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বসানো হয়েছে কোরবানির অস্থায়ী পশুর হাট। করোনা পরিস্থিতিতে এসব হাটে বেচাকেনা হরদম চললেও প্রশ্ন ওঠেছে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে ইজারাদারগণ কর্তৃক মাস্ক, সাবান, জীবানুমুক্তকরণ সামগ্রী সংগ্রহ এবং এগুলোর ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা থাকলেও উপেক্ষিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠেও বসানো হয়েছে পশুর হাট। এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিন পলাশ উপজেলার কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, কোন হাটেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না, অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতা ব্যবহার করেননি মাস্ক, হাটগুলোতে ছিল না সাবান কিংবা জীবানুমুক্তকরণ উপকরণ। এছাড়া বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ ও সড়কের পাশে বসানো হয় অস্থায়ী পশুর হাট। পলাশ উপজেলায় জেলার সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ থাকার পর এসব পশুর হাট থেকে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ার আশংকা করছেন সচেতন মহল।
এবছর জেলায় পশুর হাট বসাতে ১৪ জুলাই বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল সভায় জেলার ২৫টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর পলাশ উপজেলা প্রশাসন ১৫ জুলাই নরসিংদীর একটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি জারির দিনই দুপুর ১টা পর্যন্ত দরপত্র বিক্রির শেষ সময়, ২টার মধ্যে দাখিল এবং ৩টায় দরপত্র খোলার সময় নির্ধারণ করে হাট ইজারা দেয়।
স্থানীয়রা জানান, পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসানো হয় পশুর হাট। এছাড়া পলাশ উপজেলার অস্থায়ী পশুর হাটের মধ্যে একটি ডাংগা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, অপরটি ঐতিহ্যবাহী জিআরসি ফুটবল খেলার মাঠ। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর কারণে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও মাঠের নিয়মিত খেলোয়ারগণ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, প্রতিষ্ঠানের মাঠে পশুর হাট বসানো হলে মাঠ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া নর্দমায় দীর্ঘদিনের জন্য একটি দুর্গন্ধময় এলাকায় পরিণত হয়ে আশপাশের পরিবেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, মাঠে গর্ত করে বাঁশ ব্যবহার করার ফলে সেই গর্ত পুণরায় ভরাট না করায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ মানুষজন চলাফেরা করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, খেলার মাঠে পশুর হাট বসানোর ফলে এই সময়ে খেলা বন্ধ থাকে। মাঠটি নর্দমা ও কর্দমাক্ত পরিস্থিতির কারণে মাসের পর মাস খেলার অযোগ্য থাকে। আর মাঠে গর্ত করে বাঁশ পুতে রাখার কারণে যে গর্তের সৃষ্টি হয় তা পরবর্তীতে ভরাট না করার কারণে অনেক খেলোয়ার ও রেফারীর পা ভেঙ্গে যাওয়ারও নজির রয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো: আমিনুল ইসলাম জানান, স্কুল ও খেলার মাঠে পশুর হাট বসানো যাবে। তাতে কোনো বাধা নেই। বসানো যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা কোথাও নেই। এছাড়া হাটের দরপত্র ইজারা কার্যক্রম যথারীতি নিয়ম মেনেই সম্পন্ন করা হয়েছে।