পঞ্চগড়ে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ে বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেনসহ ৮১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১১০০ থেকে ১২০০ জনকে আসামি করে পঞ্চগড় সদর থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা প্রদান, পুলিশের উপর বল প্রয়োগ, সড়ক অবরোধ, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, হামলা, ভাঙচুর এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে এসব মামলা করে। এরই মধ্যে শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৮ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
পরে তাদের ওইসব মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলার পরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-সদর উপজেলার জেলা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা কানন (২৮), আটোয়ারী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আকতারুজ্জামান আতা (৪৫), বিএনপির সমর্থক সিদ্দিকুল ইসলাম (৩৫), দেবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মেহেদি হাসান তুহিন (৩৫), বিএনপি সমর্থক রেজাউল ইসলাম (৪৫), বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু আহমেদ (২৮), তেঁতুলিয়া উপজেলার জামায়াতের কর্মী জয়নাল আবেদিন (৪০) ও সাইফুল ইসলাম (৬৫)।
বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা।
এদিকে, গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
পুরো জেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে হামলা করেছে।লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। পঞ্চগড়ের মতো জেলায় আগে কখনো এমনটি হয়নি। আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশের মারধর ও টিয়ারশেলের কারণে আব্দুর রশিদ আরেফিন নামে আমাদের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে।
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, গতকাল বিএনপি নেতারা পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে পুলিশের উপর হামলা করে এবং ভাঙচুর করে।
যানমালের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ টিয়ালশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। এ ঘটনায় পাঁচটি মামলা হয়েছে। মামলায় ৮১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১১০০/১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষকে কোনো হয়রানি করা হবে না। আর যে ব্যক্তি মারা গেছেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে মেডিকেল বোর্ড আমাকে নিশ্চিত করেছে। সংঘর্ষের সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।