৫ জুলাই ২০২৩ বুধবার ৬:০৯:৩০ অপরাহ্ন |
ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে দ্বিতীয় দফায় সাগর নন্দিনী-২ নামে তেলবাহী ট্যাংকার বিস্ফোরণের পর লাগা আগুন নিভে গেছে। তাই মঙ্গলবার (০৪ জুলাই) দিনভর জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল ও বিধ্বস্ত সাগর নন্দিনী-২ নামক তেলবাহী ট্যাংকারটি পরিদর্শন করেছে।
মঙ্গলবার (০৪ জুলাই) সকাল থেকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. আমিন উল আহসান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আ. খালেক মল্লিক, যুগ্ম সচিব মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএর নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মো. শাহজাহানসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পৃথক ও সমন্বিতভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রিভেন্টিভ সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা যেসব কারণে ঘটছে সেগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি জাহাজগুলোতে ফায়ার ফাইটিং ইক্যুয়েপমেন্ট পর্যাপ্ত রয়েছে কিনা এমন বিষয়সহ সামনে আসা সব বিষয় খতিয়ে দেখতে বলেছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে আমাদের অসচেতনতায়। প্রথমত দায়ী অসচেতনতাই এবং দ্বিতীয় বিষয় হলো, যে-ইনবিল্ট ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম আমাদের শিপগুলোতে থাকা উচিত।
ভ্যাসেলে ইনবিল্ট ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম দুর্বল জানিয়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, একটা জাহাজে ডিফল্ট যে ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম থাকা প্রয়োজন, তা এখানে (সাগর নন্দিনী-২) অতটা ছিল না। এ কারণে হয়তো তারা পৃথকভাবে ফায়ার ফাইটিং করতে পারেনি, আমাদের মাধ্যমে করতে হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মনযোগ দিতে হবে। কারণ সবাই দেখেছেন বিস্ফোরণের পরে কি ঘটতে পারে, এ বিস্ফোরণে দুই শত মিটার দূরে উড়ে যাওয়া লাশ খুঁজতেই দুদিন লেগেছে।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে জানিয়ে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যে কোনো ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি করা হয় এবং কমিটির প্রতিবেদনে আমরা একটি সুপারিশমালাও দিয়ে থাকি। আমরা সবসময় বলি অগ্নিনির্বাপণের জন্য ওই ভ্যাসেলের এরিয়া অর্থাৎ আয়তন এবং ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী ইনবিল্ট ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম থাকার বিষয়ে। ইনবিল্ট ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম যেরকম থাকা উচিত সেটার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি ভ্যাসেলের স্টাফদের ফায়ার ফাইটিং এর ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়মিত ড্রিল করার দিকেও জোর দিতে হবে। অন্তত প্রতি ছয় মাসে একবার হলেও তারা যেন ড্রিল করে।
গত ১ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামক তেলের ট্যাংকারে বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সোমবার (৩ জুলাই) উদ্ধার অভিযান শেষ করার এক ঘণ্টার মাথায় সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টার দিকে একই জাহাজে বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১৯ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক
শেয়ার করতে ক্লিক করুন: | Tweet |