নীতিমালা ভঙ্গ করে শিক্ষক বদলি

নীতিমালা ভঙ্গ করে শিক্ষক বদলি

দিরাই প্রতিনিধি
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক বদলির নীতিমালা ভঙ্গ করে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার এক শিক্ষিকাকে শাল্লা উপজেলায় বদলির আদেশ দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। নীতিমালা ভঙ্গ ও শাল্লার বেকারদের চাকুরির স্বার্থ নষ্ট করে ঐ শিক্ষিকার যোগদান না দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রীতম দাস।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের অনুলিপি উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং শাল্লা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকেও দেওয়া হয়।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকদের আন্ত:উপজেলা বদলির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তাহিরপুর উপজেলার সোহালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রোমানা আক্তার কে তার স্বামীর বাড়ী নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলায় বদলি না করে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মামুদনগর গ্রামে বদলির সুপারিশ করে অগ্রগতি প্রতিবেদন দেন। পরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুর রহমানও একইভাবে এটি অগ্রবর্তী করেন। কিন্তু যে বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ দিয়েছেন সেই বিদ্যালয়েও কোন শূন্যপদ নেই। এখন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার উপজেলা শিক্ষা অফিসকে চাপ দিয়ে তাকে দ্রুত যোগদান দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রোমানা আক্তার কে খালিয়াজুরি উপজেলায় বদলি না করে শাল্লা উপজেলায় বদলির আদেশ দেওয়ায় আগামীতে শিক্ষক নিয়োগ হলে শাল্লার একজন চাকুরিপ্রার্থী নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হবেন। একটি পদ স্থায়ীভাবে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
আবেদনকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রীতম দাস বলেন, এই শিক্ষিকা এখানে যোগ দিলে আমাদের শাল্লার একজন বেকারের চাকুরির পথ বন্ধ হবে। এ কারণে আমি লিখিত আবেদন করে শাল্লা উপজেলার স্বার্থ রক্ষার দাবি জানিয়েছি। প্রয়োজনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা করবো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আব্দুর রহমান বলেন, বদলির আবেদন অনলাইনে করা হয়। যে শিক্ষক বদলির আবেদন করেছেন, তিনি ভুল করতে পারেন আবার ইচ্ছে করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করতে পারেন। কম সময়ে যাচাই করার কারণে প্রধান শিক্ষক বা উপজেলা শিক্ষা অফিসের যাচাই-বাচাইয়ে সেটি হয়তো ধরা যায় নি। তারা অগ্রবর্তী করায় আমিও সেটি অগ্রবর্তী করেছি। পদ শূন্যের বিষয়টি প্রথমে সার্ভারে সংশ্লিষ্ট স্কুলে দুটি পদ শূণ্য দেখিয়েছে। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একটি পদ শূণ্য জানানোয় পাশর্^বর্তী স্কুলে তাকে পদায়ন করা হয়েছে।
শাল্লা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তালেব বললেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক বদলির নীতিমালা অনুযায়ী দক্ষিণ মামুদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ পাওয়া ওই শিক্ষিকার বদলির সুযোগ নেই। এভাবে বদলি হলে শাল্লার আগামী নিয়োগে একজন শিক্ষক কম পাবে। এ বিষয়ে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান লিখিত আবেদন করেছেন। আমি এই আবেদনের আলোকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখব। তাছাড়া সঠিক কাগজপত্র ছাড়া ওই শিক্ষককে যাতে তড়িগড়ি করে যোগদান দেখানো না হয়, সে বিষয়টিও আমি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি।

Explore More Districts