
জাতীয় নির্বাচন হবেই এবং অস্তিত্ব রক্ষায় এই নির্বাচনে জিততেই হবে। জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও বাঙালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ীতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের বর্ধিত সভায় সূচনা ও দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ এসব মন্তব্য করেন।
সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, কোনো বিদেশী প্রেসক্রিপশন ছাড়া সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেই। এই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন বানচালকারীদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করার জন্য দলের সকলস্তরের নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকবে। এই সময়ের মধ্যে আমাদেরকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলের সকল অর্জন, সাফল্য ও সুফলগুলো ভোটাদেরকে জানাতে হবে। একই সাথে বিএনপি জামাত ক্ষমতায় থাকা বা না থাকা অবস্থায় যে অপকর্ম ও কুর্কীতিগুলো করেছে , তাও ভোটারদের কাছে তুলে ধরতে হবে। আমরা যদি ভোটারদের কাছে বর্তমান সরকারের সাফল্য এবং প্রধানমন্ত্রী জাতিকে কি কি উপহার দিয়েছেন তা যদি স্মরণ করিয়ে দিতে পারি ভোটররা অবশ্যই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের জয়যুক্ত করবে।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলের প্রান্তিক গোষ্ঠীর তিন কোটি মানুষ সরাসরি উপকারভোগী হয়েছেন। ভূমি ও গৃহহীন ৫ লক্ষ মানুষ বিনামূল্যে ভূমি ও গৃহ পেয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলারের দাম বিরাশি টাকা থেকে বেড়ে একশত সাড়ে দশ টাকা হওয়ায় আমদানিকৃত নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে বর্তমান সরকার টিসিবির মাধ্যমে এক কোটিরও বেশি পরিবারকে ভুর্তুকি দিয়ে মাত্র ৪৭০ টাকায় ৫ কেজি চাল, দুই লিটার তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও দুই কেজি চিনি প্রদান করছে। বাজারে যার মূল্য ৮শত টাকার বেশি। জনগণকে ভুতুর্কি দিয়ে এইভাবে সেবা দেয়ার নজির পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। বর্তমান সরকারের শাসনামলে দলমত নির্বিশেষে কোনো ধরনের সুফল পায় নি এরকম একটি মানুষও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বছরের প্রথম দিন স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে পাঠ্যবই পেয়েছে এমন নজির পৃথিবীতে নেই। এছাড়াও আকাশ বিজয়, সমুদ্র বিজয় এবং অবরুদ্ধ ছিটমহলগুলোকে বাংলাদেশের সাথে সংযুক্তিকরণের বিজয় জাতিকে গর্বিত করেছে। এই সব সাফল্যের কীর্তি ছাড়াও আরো অনেক বড় বড় কীর্তি আওয়ামী লীগের শাসনামলে অর্জিত হয়েছে। এই সব সাফল্যের জন্য ভোটারদের নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকার কথা। কিন্তু বাঙালি জাতি বিস্মৃতিশীল জাতি। তারা সহজেই অনেক কিছুই ভুলে যায়। আমাদের এত সাফল্যের মধ্যে নেতাকর্মীদের ব্যর্থতা হলো আওয়ামী লীগের সাফল্যের ও কীর্তির ফিরিস্তিগুলো ভোটরদের কাছে পৌছে দিতে পারি নি। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের সাথে সাথে এখন থেকে আমাদেরকে ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের মনজয় করতে হবে এবং আমাদের এই সরকারের সাফল্যগুলো তথ্য জানান দিতে হবে তাহলে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকানোর সাধ্য কারো নেই।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন তিনটি পূর্ণাঙ্গ ও তিনটি আংশিকসহ ৬টি সংসদীয় আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দিবেন তাকেই বিজয়ী করতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত তৃণমূলের বর্ধিত সভায় সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. সুনীল কুমার সরকার, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এম.পি, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শফর আলী, শেখ মাহমুদ ইছহাক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শফিক আদনান, সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান ছিদ্দিকী, হাজী মো. হোসেন, আবু তাহের, সাবেক যুবনেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু এম.পি, কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল আবছার মিয়া, সৈয়দ আমিনুল হক, পেয়ার মোহাম্মদ, বখতিয়ার উদ্দিন খান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, ইঞ্জি. বিজয় কিষাণ চৌধুরী, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, ড.নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মোরশেদ আকতার চৌধুরী, মহানগর যুবলীগের মাহবুবুল হক সুমন , আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আজিজুর রহমান আজিজ,মহানগর ছাত্রলীগের ইমরান আহমেদ ইমু, জাকারিয়া দস্তগীর,মহানগর কৃষক লীগের কাজী আনোয়ার হাফিজ, তাঁতী লীগের নুরুল আমিন মানিক,মৎস্যজীবি লীগের এম এ মোতালেব প্রমুখ। এছাড়া ১৫টি থানা, ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহবায়ক যুগ্ম আহবায়কগণ উপস্থিত ছিলেন।