নির্বাচনে শুরু নির্বাচনে শেষ

নির্বাচনে শুরু নির্বাচনে শেষ

স্টাফ রিপোর্টার
বছরের শুরুতেই ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় জেলার তিন পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করন ১৬৬ জন প্রার্থী। এরমধ্যে মেয়র পদে ১০, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলার পদে ১২০ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সুনামগঞ্জ পৌরসভায় ২য় বারের মতো আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাদের বখত, ছাতক পৌরসভায় টানা চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম চৌধুরী, জগন্নাথপুরে পৌরসভায় স্বতন্ত্র (বিএনপি বিদ্রোহী) আক্তার হোসেন জয়ী হন।
এদিকে ৪ ধাপে জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে ৭ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, বিশ^ম্ভরপুর, জগন্নাথপুর, দিরাই উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন ৩ হাজার ৪১৮ জন প্রার্থী। এরমধ্যে প্রথম ধাপে ছাতকের ৩ ইউনিয়নে ১৮২ প্রার্থী, ২য় ধাপে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার ১৯ ইউনিয়নে ৯৬৯ প্রার্থী, ৩য় ধাপে সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে ১ হাজার ৫৯ জন প্রার্থী এবং ৪র্থ ধাপে বিশ^ম্ভরপুর, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার ২১ ইউনিয়নে ১ হাজার ২০৮ প্রার্থী অংশ নেন। ৬০ ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নৌকা জয়ী হয়েছে ২০টিতে। নির্বাচন দিয়ে শুরু হচ্ছে আগামী বছরও। ৫ জানুয়ারি ৫ম ধাপে ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও শাল্লা উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম ধাপে ছাতকের নোয়ারাই, সিংচাপইড় ও ভাতগাঁও ইউনিয়নের মধ্যে ২টিতে নৌকা ও একটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়। দ্বিতীয় ধাপে ছাতক দোয়ারার ১৯ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ছাতকের ১০টি ইউপির মধ্যে ৪টিতে নৌকা, ৩ বিদ্রোহী ও বিএনপি ২ ও জামায়াত ১ জন বিজয়ী হয়। দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৯ ইউনিয়নের মধ্যে ৫ টিতে নৌকা, বিদ্রোহী ৩ টি এবং ১ টিতে বিএনপি নেতা জয়লাভ করেন। ৩য় ধাপে ১৭ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নের নৌকা বিজয়ী হয়েছে ২ টিতে, বিদ্রোহী ৪, এবং বিএনপি ২। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নয় ইউনিয়নের একটিতেও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয়ী হননি। বিএনপি ৩, স্বতন্ত্র ১, জাতীয় পার্টি ২, বিদ্রোহী ২, জমিয়ত ১ টিতে বিজয়ী হয়। ৪র্থ ধাপে ৩ উপজেলার ২১ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৭ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়। এছাড়াও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৬ জন, বিএনপির ৩ জন, জাতীয় পার্টির ১ জন এবং স্বতন্ত্র ৪ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। জগন্নাথপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৩ জন, বিএনপি ১ জন, স্বতন্ত্র ১ জন এবং বিদ্রোহী ২ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামীলীগ মনোনীত ১ জন, বিএনপি ১ জন, জাতীয় পার্টি মনোনীত ১ জন, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ২ জন বিজয়ী হয়েছেন। দিরাই উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত ৩ জন, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী ২ জন, বিএনপির ১ জন এবং স্বতন্ত্র ৩ জন বিজয়ী হয়েছেন।
২০২১ সালের ১১ এপ্রিল দেশব্যাপী প্রথম ধাপে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে গত ১ মার্চ থেকে সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত করে কমিশন। দুই মাস আটকে থাকার পর বুধবার নির্বাচন কমিশন এসব নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ২১ জুন নতুন তারিখ দেয়। প্রথম ধাপে ধাপে ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ও সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নোয়ারাই ইউনিয়নে দেওয়ান পীর আব্দুল খালিক রাজা এবং সিংচাপইড় ইউনিয়নে সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল বিজয়ী হন। ভাতগাঁও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস মিয়া মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ২ নভেম্বর এ ইউনিয়নে নির্বাচনে আওলাদ হোসেন মাস্টার বিজয়ী হন।
২য় ধাপে ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে ছাতক সদর ইউনিয়নে সাইফুল ইসলাম, খুরমা উত্তর ইউনিয়নে বিল্লাল আহমদ, কালারুকা ইউনিয়নে অদুদ আলম, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নে গয়াছ আহমদ, জাউয়াবাজার ইউনিয়নে আব্দুল হক, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নে সুন্দর আলী, ইসলাপুর ইউনিয়নে অ্যাড. সুফী আলম সুহেল, চরমহল্লা ইউনিয়নে আবুল হাসনাত, দোলারবাজার ইউনিয়নে নূরুল আলম, দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নে আবু বকর, দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নে আবদুল হামিদ, বোগলাবাজার ইউনিয়নে মিলন খান, সুরমা ইউনিয়নে এমএ হালিম বীরপ্রতীক, লক্ষীপুর ইউনিয়নে জহিরুল ইসলাম, বাংলাবাজার ইউনিয়নে এম আবুল হোসেন, মান্নারগাঁও ইউনিয়নে ইজ্জত আলী, পান্ডারগাঁও ইউনিয়নে আবদুল ওয়াহিদ, দোহালিয়া ইউনিয়নে শামীমুল ইসলাম, নরসিংহপুর ইউনিয়নে নূর উদ্দিন আহমদ বিজয়ী হন।
৩য় ধাপে ২৮ নভেম্বর সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নে আব্দুল ওয়াদুদ, মোহনপুর ইউনিয়নে মো. মঈন উল হক, মোল্লাপাড়া ইউনিয়নে মো. নুরুল হক, রঙ্গারচর ইউনিয়নে মো. আব্দুল হাই, কাঠইর ইউনিয়নে শামসুল ইসলাম, কোরবাননগর ইউনিয়নে মো. আবুল বরকত, গৌরারং ইউনিয়নে মো. শওকত আলী, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে রশিদ আহম্মেদ, সুরমা ইউনিয়নে আমির হোসেন রেজা, পাথারিয়া ইউনিয়নে শহীদুল ইসলাম, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে জগলুল হায়দার, পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে রিয়াজুল ইসলাম, শিমুলবাঁক ইউনিয়নে শাহীনুর রহমান, জয়কলস ইউনিয়নে আব্দুল বাছিত সুজন, পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে মাসুক মিয়া, দরগাপাশায় ইউনিয়নে সুফি মিয়া, পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নে লুৎফুর রহমান জায়গীরদার খোকন জয়ী হন।
৪র্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নে রফিক মিয়া, পাটলী ইউনিয়নে আঙ্গুর মিয়া, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে শহীদুল ইসলাম বকুল, রানীগঞ্জ ইউনিয়নে সদরুল ইসলাম, সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে আবুল হাসান, আশারকান্দি ইউনিয়নে আয়ুব খান, পাইলগাঁও ইউনিয়নে মখলিছ মিয়া, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নে মো. সোহেল আহমদ, ধনপুর ইউনিয়নে মো. মিলন মিয়া, সলুকাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নুরে আলম সিদ্দিকী, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নে মো. ছবাব মিয়া, ফতেপুর ইউনিয়নে মো. ফারুক আহমদ, দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নে শৈলেন চন্দ্র দাস, ভাটিপাড়া ইউনিয়নে মিফতাহ চৌধুরী, রাজানগর ইউনিয়নে জহিরুল ইসলাম, চরনারচর ইউনিয়নে পরিতোষ রায়, সরমঙ্গল ইউনিয়নে মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, করিমপুর ইউনিয়নে লিটন চন্দ্র দাস, জগদল ইউনিয়নে হুমায়ুন রশীদ লাভলু, তাড়ল ইউনিয়নে আলী আহমদ, কুলঞ্জ ইউনিয়নে একরার হোসেন বিজয়ী হয়েছেন।
অপরদিকে ১৩ জুলাই জগন্নাথপুর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত জেলা পরিষদের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের উপ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ দুলাল। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ সাব্বির আহমেদ মৃত্যুবরণ করলে আসনটি শূন্য হয়। এর আগে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একাধিকবার লকডাউনের কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়।

Explore More Districts