নামেই ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’, কাজে নেই!

নামেই ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’, কাজে নেই!

৯ July ২০২৫ Wednesday ৫:৪৯:২৩ PM

Print this E-mail this


ঝালকাঠি প্রতিনিধি:

নামেই ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’, কাজে নেই!
ঝালকাঠি জেলায় ৩টি ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবন রয়েছে। তবে চিকিৎসাসেবা নেই। এ হাসপাতালগুলো নির্মাণ করা হয়েছে গর্ভবতী মায়েদের সিজারিয়ান (অপারেশন) ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য। কিন্তু মেডিকেল সরঞ্জাম, ওষুধ ও জনবল সংকটের কারণে তা কার্যকর হচ্ছে না।

হাসপাতালগুলোর মধ্যে শয্যা ও ডরমেটরি রয়েছে, এমনকি বিদ্যুৎ চলে গেলেও বিকল্প হিসেবে জেনারেটরও স্থাপন করা হয়েছে। তবে, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্টাফের অভাবে হাসপাতালগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। এর ফলে এলাকাবাসী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

২০১৮ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এসব হাসপাতাল উদ্বোধন করা হলেও ৭ বছরেও হাসপাতালগুলো সম্পূর্ণভাবে চালু হয়নি। বর্তমানে এই হাসপাতালগুলোতে কোনো চিকিৎসক নেই, যা রোগীদের চিকিৎসার প্রক্রিয়াকে আটকে রেখেছে।

এলাকাবাসী জানান, সেবা যদি না পাই তাহলে এসব হাসপাতালে এসে কী করব? আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট  কর্তৃপক্ষের কাছে জনবল নিয়োগের জন্য দাবি করেছেন, কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিনয়কাঠি হাসপাতালে আসা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘এখানে আগে কিছু ওষুধ পেতাম ৬/৭ মাস ধরে কোনা ওষুধও পাই না, ডাক্তার নাই। নামে আছে হাসপাতাল, কামে নাই।’

ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ও শেখেরহাট ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এবং
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। জেলার ৪ উপজেলায় ৩টি হাসপাতাল। এ হাসপাতালগুলোর জনবল সংকটের কারণে নষ্ট হতে চলেছে। স্থানীয়রা প্রথমে হাসপাতালটি পেয়ে খুশি হলেও, সেবা না পেয়ে এখন হতাশ। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স, ওষুধ এবং অন্যান্য সেবা নেই।

আরও জানা গেছে, হাসপাতালের ভবনটিতে দুটি চিকিৎসকের চেম্বার, দুটি নার্স রুম, ফার্মেসি, ল্যাব, ওয়েটিং রুম, কাউন্সিলিং রুম, স্টোর রুম, খাবার সরবরাহ কক্ষ, অফিস কক্ষ ছাড়াও রোগীদের জন্য সাধারণ ওয়ার্ড, এসি সংবলিত অপারেশন থিয়েটার, পোস্ট অপারেটিভ রুমসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কক্ষ রয়েছে। কিন্তু জনবল নিয়োগ না হওয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি করা হয় না। তাই ওয়ার্ডে নেই কোনো শয্যা, অপারেশন থিয়েটারে নেই অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
 

দপদপিয়া ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী (এফপিআই) মো. শামীম হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে ২জন ডাক্তার থাকার কথা একজনও নাই, ভিজিটর ৪ জনের মধ্যে ১ জন আছে, ফার্মাসিস্ট একজন ও ১ জন দাই নার্সকে দিয়েই চালিয়ে রাখা হচ্ছে হাসপাতাল।’
 

হাসপাতালগুলোতে সেবা নিতে আসা রোগীরা বলেন, ‘হাসপাতালটি উদ্বোধন হলেও আমরা কোনো সেবা পাইনি। এখানে কোনো চিকিৎসক বা নার্স নেই, আর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না।’ 

তারা আরও জানান, সেবা না পাওয়ায় অনেক সময় জেলার সদর হাসপাতালে বা বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হয়, যা তাদের জন্য একটি বড় ভোগান্তি।

ঝালকাঠি পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাপস কুমার শীল বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে পদ সৃষ্টি হয়েছে। এখন সৃষ্ট পদে জনবল নিয়োগ হলেই আরও ভালোভাবে চিকিৎসা সেবাদান করতে পারবো।’

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts