নাজিরপুরে হিট স্ট্রোকে মরছে মুরগি, কমছে ডিম উৎপাদন

নাজিরপুরে হিট স্ট্রোকে মরছে মুরগি, কমছে ডিম উৎপাদন

২ মে ২০২৪ বৃহস্পতিবার ১০:২৯:০১ অপরাহ্ন

Print this E-mail this


নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি:

নাজিরপুরে হিট স্ট্রোকে মরছে মুরগি, কমছে ডিম উৎপাদন

সারাদেশের মতো পিরোজপুরেও বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। হাঁসফাঁস করছে মানুষ। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষি, স্বাস্থ্য, গবাদিপশু ও মুরগির খামারে। মারা যাচ্ছে খামারের মুরগি। কমতে শুরু করেছে ডিমের উৎপাদন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা।

নাজিরপুর উপজেলার বেদবাড়ী গ্রামের খামারি সিদ্দিক ভূইয়া জানান, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে মুরগি মারা যাচ্ছে। কারণ প্রতিটি খামারে টিনের চালা। রোদের তাপ টিনে বেশি লাগে। যে কারণে মুরগির গরমও লাগে বেশি। গরমে দিনে ৫-৬ বার মুরগির শরীরে পানি ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না। গরমে মুরগি ছটফট করছে। স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। মুরগিকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া যাচ্ছে না। এতে কমতে শুরু করেছে ডিমের উৎপাদন।

উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়পুর গ্রামের খামারি বিকাশ চন্দ্র। তার খামারে গিয়ে দেখা যায়, খামারে তিন হাজার ৭০০ লেয়ার মুরগি রয়েছে। মুরগি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কর্মচারীরা। কেউ মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করছেন, কেউবা ডিম সংগ্রহ করছেন। অন্যদিকে খামারের ভেতর ঠান্ডা রাখতে চলছে বৈদ্যুতিক পাখা। কিন্তু তাতেও যেন কাজ হচ্ছে না। মুরগিগুলো হাঁসফাঁস করছে গরমে।

খামার থেকে পাইকারি ডিম কিনে খুচরা বিক্রেতা আজিজুল ফকির জানান, আগের চেয়ে ডিমের উৎপাদন কম। আবার ডিমের সাইজও ছোট। দাম কম পাওয়া যাচ্ছে। দোকানে গেলে দোকানিরা ছোট ডিম নিতে চান না।

দেউলবাড়ী ইউনিয়নের খামারি আবুল শেখ। তিনি জানান, তার খামারে পাঁচ হাজার মুরগি রয়েছে। গত এক সপ্তাহে অন্তত ৩০০ মুরগি মারা গেছে। গরমে মুরগির স্ট্রোক ঠেকাতে যেসব ওষুধ ও স্যালাইন ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে ডিমের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এভাবে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে খামারে লাভের কোনো সম্ভাবনা নেই। লোকসান এড়াতে খামারিরা কম দামে মুরগি বিক্রি করছেন বলেও জানান তিনি।

নাজিরপুর সদর বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আফতাবউদ্দিন খান জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে ব্রয়লারের দাম কেজিতে কমেছে ৪০-৫০ টাকা। বর্তমানে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

দাম কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরমে মুরগি স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। এজন্য খামারিরা লোকসান কমাতে মুরগি দ্রুত বিক্রি করে দিচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে আমরা খামারিদের নিয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক, সচেতনতা সৃষ্টির জন্য লিফলেট বিতরণ করছি। অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। কোনো খামারি সমস্যার কথা জানালে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা সেবা ও অন্যান্য পরামর্শ দিচ্ছি।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক



শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts