নদীতেই রণক্ষেত্র, বরিশালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে অর্ধশত সংঘর্ষ

নদীতেই রণক্ষেত্র, বরিশালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে অর্ধশত সংঘর্ষ

২৪ October ২০২৫ Friday ১২:৫০:১৯ PM

Print this E-mail this


বিশেষ প্রতিনিধি:

নদীতেই রণক্ষেত্র, বরিশালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে অর্ধশত সংঘর্ষ

এবারের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি হামলার অভিযোগ উঠেছে। বরিশালে জেলেদের সঙ্গে অভিযানিক দলের অর্ধশত সংঘর্ষে আহতের সংখ্যা শতাধিক। আটক হয়েছেন প্রায় ৭০০ জন জেলে। মৎস্য বিভাগ বলছে, অস্ত্র নিয়ে চলতি বছর নদী দাপিয়ে বেড়ানোর চেষ্টা চালিয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। আর জেলেদের দাবি, আগাম খাদ্য সহায়তা না পাওয়ায় নদীতে নেমেছেন তারা।

মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। নিষেধাজ্ঞা সফলে প্রথমবারের মতো এবার নদীতে ড্রোন দিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। জল কামান ব্যবহার করা হচ্ছে মাছ শিকারিদের দমাতে। তবুও, বিভিন্ন নদীতে দেখা মিলছে শতশত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার।

এবার বরিশালে মাছ ধরার বিরুদ্ধে অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ইলিশের হটস্পট মেঘনাতেই ঘটেছে ২০ টি সংঘর্ষ। সিনেমার মতোই ভয়াবহ দৃশ্য দেখা গেছে জেলে আর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘটিত এসব সংঘর্ষে।

মৎস্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সশস্ত্রভাবে মাছ শিকার করেছে অনেকে। অভিযানে হামলার শিকার হয়ে নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসার ও জেলে মিলে আহত হয়েছেন শতাধিক। বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক জহিরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, ‘আমাদের টিম বারবার জেলেদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছে। তারা যেকোন উপায়ে মারমুখীভাবে আচরণ করছে এবং ইলিশ ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে জেলেদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারের দেয়া মাত্র ২৫ কেজি চালে সংসার চলে না। আছে, স্থানীয় প্রভাবশালী অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিও। জেলেরা বলছে, সরকারি ক্ষুদ্র সহায়তায় সংসার চালানো কষ্টকর। অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়। তাই বাধ্য হয়েই নদীতে জাল ফেলতে হয়। তবে পেটের টানে মাছ ধরতে গেলে মারধরের শিকারও হতে হয়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, মা ইলিশ সংরক্ষণ কার্যক্রম টেকসই করতে প্রয়োজন সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি জেলেদের অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচের জন্যও আর্থিক সহায়তা দেয়া উচিত। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে একটি মোটিভেশনাল দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা দরকার-যে তারা দেশের জাতীয় স্বার্থে এই কাজটি করছেন। যদি এভাবে আর্থিক নিরাপত্তা ও প্রেরণা দুটোই নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আমি মনে করি, এ ধরনের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি আর তৈরি হবে না।’

এবারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞাকালীন বিভাগে সাড়ে ৬শর বেশি জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। জব্দ করা হয় ১১২ লাখ মিটার জাল।

সম্পাদনা: আমাদের বরিশাল ডেস্ক


শেয়ার করতে ক্লিক করুন:

Explore More Districts