বলিউড তারকা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীর সাথে তার স্ত্রী আলিয়া সিদ্দিকীর দাম্পত্য কলহের রেশ চার দেয়ালের বাইরে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করেই চলেছিলেন। এমনকি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল তাদের দাম্পত্য বিবাদ। নওয়াজ আর তার পরিবারের বিরুদ্ধে পারিবারিক নির্যাতনের মামলা করেছিলেন আলিয়া। এবার সবকিছু মিটমাট করতে চাইছেন নওয়াজ-পত্নী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক খোলা চিঠিতে এমনই ইঙ্গিত দিলেন তিনি। মনে হচ্ছে এবার একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে চলেছেন নওয়াজুদ্দিন। শিগগিরই মুক্তি পেতে চলেছে তার অভিনীত ‘জগিরা সারা রা রা’ ছবি।
এদিকে, স্ত্রী আলিয়া সবকিছু ভুলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইছেন। এমনকি নওয়াজ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আনা সব মামলা তুলে নিতে চাইছেন। ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী আলিয়া ইনস্টাগ্রামে নওয়াজের উদ্দেশ্যে এক খোলা চিঠি লিখেছেন। সেই চিঠিতে আলিয়া লিখেছেন, হ্যালো নওয়াজ, এই চিঠি তোমার জন্য। আমি অনেক জায়গায় শুনেছি আর পড়েছি যে জীবন মানে এগিয়ে যাওয়া।
কয়েক মাস ধরে আমাদের মধ্যে যা কিছু ঘটেছে, আমি সব কিছু ভুলে যেতে চাই। আর ওপরওয়ালার প্রতি আস্থা রেখে আমি নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে আর তোমার সব অন্যায়কে মাফ করে জীবনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আর আমি জীবনকে এক সুন্দর রূপ দেওয়ার চেষ্টা করব। অতীতের জালে ফেঁসে থাকা কোনো চক্রব্যূহে ফেঁসে থাকার চেয়ে কম কিছু নয়। আর তাই অতীতকে পেছনে ফেলে, এই ভুল দ্বিতীয়বার না করার অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের সন্তানদের এক সুন্দর ভবিষ্যৎ দেওয়ার শপথ নিচ্ছি আমি।
তিনি নওয়াজের উদ্দেশ্যে আরো লিখেছেন, তুমি বাবা হিসেবে অত্যন্ত ভালো। আর আশা করি যে ভবিষ্যতে তুমি তোমার সব কর্তব্য ভালোভাবে পালন করবে। আর তাদের একটা ভালো ও সুন্দর ভবিষ্যৎ দেওয়ার সব রকম প্রয়াস করবে। আমার এই যুদ্ধ শুধু আমার সন্তানদের জন্য ছিল। ওদের মুখে হাসি দেখে আমার সব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে গেছে আর রাগ গলে জল হয়ে গেছে। নওয়াজ, আমরা একসঙ্গে একটা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছি। আমরা জীবনে অনেক চড়াই উতরাই দেখেছি আর সব কঠিন সময় আমরা জয় করেছি।
আর তাই আশা করি, তুমি তোমার ক্যারিয়ারকে অনেক বেশি উচ্চতায় নিয়ে যাবে। আমার স্রষ্টা আমাকে সব সময় এক ভালো মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা দিয়ে এসেছে। আর তাই আমার স্রষ্টা আর আমার অন্তরের মানুষটা আমাকে সব সময় বলছে যে তোমার আর তোমার পরিবারের বিরুদ্ধে যেসব মামলা করেছিলাম, তা যেন আমি তুলে নিই। আমি তোমার থেকে কোনো প্রকার আর্থিক সাহায্য চাই না। আর আমি তার প্রত্যাশাও করি না। তোমার ছবি নির্মাণের সময় যে ঋণ নেয়া হয়েছিল, তা আমি আমার অংশের ঘর বিক্রি করে শোধ দিতে চাই। কারণ, আমার ভেতরের মানুষটি আমাকে কারো সঙ্গে প্রতারণা করার অনুমতি দেয় না। আর তাই আমি সবকিছু শোধ করে নিজেকে মুক্ত করতে চাই।
ভবিষ্যতে কাজে মনোযোগ দিতে চান উল্লেখ করে আলিয়া লিখেছেন, আমার কর্মই আমাকে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রার্থনা শুধু একটাই, তুমি আর তোমার পরিবারের সবাই যেন সুস্থ থাকো। আমরা ভালো স্বামী-স্ত্রী হয়ে উঠতে পারিনি, আশা করি আমরা ভালো মা-বাবা হয়ে উঠব। এই জীবনে যা কিছু ঘটেছে, এ কারণে একে অপরকে যেন ক্ষমা করে দিই। আর জীবনের পথে এগিয়ে যেতে চাই। তুমি সব সময় হাসিখুশি থেকো।
ডি- এইচএ