চন্দনাইশের নবগঠিত দোহাজারী পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. লোকমান হাকিম। তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ১০৮ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান বেগ পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৯ ভোট।
অপর মেয়র প্রার্থী ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী মো. জায়নুল আলম পেয়েছেন ১ হাজার ৯৭৯ ভোট।
এছাড়া সংরক্ষিত ১নং আসনে আয়েশা আক্তার আনারস প্রতীকে ১৭৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাহিদা বেগম মুন্নি চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১৬৯৫ ভোট।
২নং আসনে মমতাজ বেগম চশমা প্রতীকে ২৮৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর বেগম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৮৬৬ ভোট এবং ৩নং আসনে রাজিয়া সুলতানা রাজু চশমা প্রতীকে ২১০৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাজিয়া সুলতানা জবা ফুল প্রতীকে পেয়েছেন ২,০৮২ ভোট।
সাধারণ ১নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ আবদুল আজিজ পাঞ্জাবি প্রতীকে ৯৫৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াহিদুল আলম ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬৬ ভোট।
২নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শাহ আলম ব্ল্যাকবোর্ড প্রতীকে ৮২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাবের আহমদ গাজর প্রতীকে পেয়েছেন ৭৭৮ ভোট।
৩নং ওয়ার্ডে মো. জাহাঙ্গীর আলম উটপাখি প্রতীকে ১,০৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টিপু কান্তি নাথ পাঞ্জাবি প্রতীকে পেয়েছেন ২৭৮ ভোট।
৪নং ওয়ার্ডে পহর উদ্দীন পাঞ্জাবি প্রতীকে ৪৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাছির উদ্দীন ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৪৩৪ ভোট।
৫নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ ইদ্রিস টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে ৮৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মতিউর রহমান উটপাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৫৯৮ ভোট।
৬নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ মহিউদ্দীন ডালিম প্রতীকে ৮৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. নাছির উদ্দীন টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে পেয়েছেন ৬২১ ভোট।
৭নং ওয়ার্ডে মোহম্মদ আলমগীর গাজর প্রতীকে ১,০১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামাল উদ্দীন ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৮৬৯ ভোট।
৮নং ওয়ার্ডে চিত্ত রঞ্জন বিশ্বাস উটপাখি প্রতীকে ৪৪৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষ্ণ কান্তি ভট্টাচার্য ব্ল্যাকবোর্ড প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৬ ভোট।
৯নং ওয়ার্ডে মো. নাজিম উদ্দীন টেবিল ল্যাম্প প্রতীকে ৬৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৌহিদুল ইসলাম ডালিম প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬৬ ভোট।
উপজেলা ভিডিও কনফারেন্স রুমে নির্বাচনের বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
এর আগে আজ সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলে। ১৪টি কেন্দ্রের কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ও বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেনি।
আজ ভোর থেকেই শত শত নারী পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে কেন্দ্রে ঢোকাকে কেন্দ্র করে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। কোনো ধরনের সংঘর্ষ ছাড়াই এ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন ভোটাররা। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল পর্যাপ্ত।
প্রথমবারের মতো ইভিএম’র মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করায় ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে একটু সময় নিয়েছে। ফলে অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি থাকায় বিকেল ৪টার পরও ভোটারদের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট প্রদান করতে দেখা গেছে।
দোহাজারী পৌরসভার ১৪টি কেন্দ্র সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নারী-পুরুষ সমানতালে ভোট কেন্দ্রে এসেছেন। সকাল সাড়ে ৯টায় হাছনদন্ডী এম রহমান সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। ওই কেন্দ্রে ১০টি বুথে ৩ হাজার ৩শ’ ১০ ভোটের মধ্যে দেড় ঘন্টায় ৩৪৬ ভোট পড়েছে।
এসময় ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ সোহেল জানান, মহিলাদের আঙ্গুলের ছাপ না মিলায় ভোট প্রদানে একটু বিলম্ব হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টায় চাগাচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩ হাজার ১৮৭ ভোটের মধ্যে ৬৩৭ ভোট পড়ে। বিকেল ৩টার দিকে রায়জোয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ হাজার ৯০ ভোটের মধ্যে ৭০০ ভোট পড়ে।
দুপুর ২টার দিকে জামিজুরী আজিজিয়া সুন্নিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নাতি আবু তৈয়বের কাঁধে ভর করে ভোট দিতে আসা শতবর্ষী সুফিয়া খাতুন জানান, ইভিএমে কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই সুইচ টিপে ভোট দিতে পেরেছেন। ভোট দিতে কোনো অসুবিধা হয়নি বলে জানান তিনি।
পূর্ব দোহাজারী আফজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা গৃহবধু ফেরদৌস আকতার জানান, কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক প্রার্থীই জানিয়েছেন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মিনহাজুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল উপচে পড়া। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট চলাকালে ১৪টি কেন্দ্রের কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি ছাড়া সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
তিনি জানান, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট, প্রতি কেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ সদস্য, ৮ জন আনসার সদস্য, ৩ প্লাটুন বিজিবি, পর্যাপ্ত সংখ্য র্যাব, স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করে।
নির্বাচন কমিশনের ৩ জন পর্যবেক্ষক সার্বক্ষণিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন।