
সোহেল রানা, রাজবাড়ী বার্তা ডট কম :
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীরের বিরুদ্ধে ১০টি প্রকল্পে দুর্ণীতির অভিযোগ এনে ৯সদস্য অনাস্থা দিয়েছেন। গত ২০ আগস্ট রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে এ অভিযোগ দায়ের করেছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য সাফিয়া বেগম, মর্জিনা বেগম, ইউপি সদস্য পলাশ চন্দ্র কর, মোঃ আবু সাঈদ, মোঃ আমিনুর রহমান বাবু, মোঃ কাবিল উদ্দিন মন্ডল, মোঃ কামরুল ইসলাম, মোঃ আকরাম হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস।
লিখিত অভিযোগে বলেন,বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ বাদশা আলমগীরের দুর্ণীতির সীমা নেই। তিনি ২০২১-২২ অর্থ বছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় নবাবপুর ইউনিয় ২৬ লক্ষ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৫৭ লক্ষ ৯২ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। যার ১০-১৫ ভাগ করা করেনি। কাজের শ্রমিকদের তালিকা করা হলেও তাদের দিয়ে কাজ করানো হয়নি। তাদের নামে বিকাশ একাউন্ট করে সব সিম নিজ জিম্মায় রেখে অর্থ উত্তোলন করে আতœসাৎ করেছে। বিষয়টি শ্রমিকরা কিছুই জানে না। ওই সব সিম সব সময় বন্ধ থাকে। কর্মসৃজন প্রকল্পে নন-ওয়েজ নামে আরও অর্থ বরাদ্দ করা হয়। যার কোন কাজ করা হয়নি। হাটবাজার বিক্রয় লব্ধ অর্থ থেকে ৫% ইউনিয়ন পরিষদে পায়। পরিষদের একটি বেরুলী হাট। ওই হাট থেকে ৪৬% অর্থ পায়। তা পরিষদকে না জানিয়ে অর্থ উত্তোলন করে আতœসাৎ করেছে। স্থায়ী সম্পদ বিক্রয় লব্ধ অর্থ থেকে ১% পরিষদের একাউন্টে জমা করা হয়। প্রতি বছর ২০ লক্ষ টাকার মতো যা চেয়ারম্যান আতœসাৎ করেছে। ইউনিয়ন পরিষদে প্রতি অর্থ বছরে ২০ লক্ষ টাকা ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ আদায় করা হয়। সেখানে ওই অর্থে কোন কাজ করা হয় না। হোল্ডিং প্লেট নির্মাণের নামে জনসাধারণের নিকট থেকে ১৭০ টাকা হিসেবে গ্রহণ পূর্বক নিজ নামে প্লেট তৈরী করে অর্থ আদায় করে। অর্থ পরিষদের একাউন্টে জমা না দিয়ে আতœসাৎ করেছেন। কাবিখা, কাবিটা, টিআর(সাধারণ) এবং এমপির বিশেষ বরাদ্দ ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়। কোন কাজ সঠিক করা হয়নি। প্রতি ঈদে ২৮৮৬জনের ভিজিএফ চাউল ১০ কেজি করে দেওয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান নিজেই এক হাজার কার্ড নিজের আয়ত্বে নিয়ে কার্ডের চাউল গোডাউনে রেখে আসে এবং বিক্রি করে নিজেই আতœসাৎ করেন। ৩৪৫টি ভিডাব্লিউপি কার্ড, রেশন কার্ড ও মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড জনসংখ্যার ভিত্তিতে ওয়ার্ড ওয়ারী বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান নিয়ম বহির্ভূত ক্ষমতার কার্ড করেন। যারা নতুন নির্বাচিত মেম্বার, তাদের বিভিন্ন ভাবে লোভ দেখিয়ে কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেয়। মিটিং এ অনেক মেম্বারকে ডাকে না। আবার রেজুলেশনে স্বাক্ষর করা হয়, তারাও জানে না কি বাবদে রেজুলেশন করা হয়েছে। এডিপি/এলজিএসপির অর্থ কোথায় প্রকল্প নেওয়া হয় তা পরিষদকে জানানো হয় না। এক কথায় চেয়ারম্যান পরিষদকে দুর্ণীতির আখড়া বানিয়ে রেখেছেন।
ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম, কাবিল উদ্দিন, আকরাম হোসেন বলেন, আমরা শুধু নামে মাত্র মেম্বার। কোথায় কি হয় আমরা জানি না। আমরা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি একটি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্তে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।