দুবাই পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

দুবাই পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

পর্যাপ্ত আয়কর আদায় না হওয়ায় বাংলাদেশ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রহমান খান।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে বার্ষিক ভোজ উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ আবদুর রহমান খান বলেন, রাজস্ব আয় কম থাকায় আমাদের ব্যয়ের তুলনায় ঘাটতি বাড়ছে, অভ্যন্তরীণ ঋণও বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই ঋণের ভার টানতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের কম দেশ আছে, যাদের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত আমাদের মতো কম। আমাদের জিডিপির মাত্র ৭ দশমিক ১ শতাংশ রাজস্ব থেকে আসে। ১৯৭২ সালের বাজেটের ৯০ শতাংশ ঘাটতি ছিল, আজও সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। ঋণের চাপ কমাতে রাজস্ব আদায় বাড়ানো প্রয়োজন।

আইকর আদায়ের পরিমাণ একটি দেশের সভ্যতার মাপকাঠি জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, একটা দেশের রাজস্ব আয়ের কত শতাংশ আইকর থেকে আসে সেটা ওই দেশ কতটা সভ্য তার একটি মাপকাঠি নির্দেশ করে। সে অনুযায়ী আমরা এখনও সভ্য জাতি থেকে বহু দূরে। কিন্তু গরিব মানুষের কাছ থেকে কর আদায় করা সহজ বলে আমরা তাদের কাছ থেকে কর আদায় করি। কারণ একজন গরিব মানুষ ঘাম মোছার জন্য একটি গামছা কিনলে কত টাকা টেক্স যায় তিনি জানেন না। তাই আয়কর আদায়ের হার বৃদ্ধি করতে হবে।

আইন সংশোধনের কথা জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, অনেকক্ষেত্রে আমাদের আয়কর আইন, মূসক আইন, শুল্ক আইনের অপব্যবহার ঘটে। আবার এগুলো সময়োপযোগী না। এই তিনটা আইন ব্যাপকভাবে সংস্কার করতে হবে। আমাদের যে পরিমাণ আয়কর আদায় হয়, এর সমপরিমাণ লোকসান হয়। ট্যাক্স এডমিনিস্ট্রিশন ও টেক্স পলিসি পৃথক লিডারশিপে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আগে আয়কর দাতার সংখ্যা ২১-২২ লাখ ছিল। গত ১০-১২ বছরে এক কোটি ১১ লাখ নতুন আয়কর দাতা নিবন্ধন হয়েছে। কিন্তু তাদের ৭০ শতাংশ আয়কর রিটার্ন দেন না। এর কারণ হল কর আইনজীবীরা তাদের ক্লাইন্টদের আয়কর না দিলে কী সমস্য হবে সেটা বুঝিয়ে বলেন না। আবার এনবিআরের যে পরিদর্শকরা আছেন তারা করদাতাদের বাড়ি ভিজিট করেন না, তদারকি করেন না। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আরকর দাতাদের টাকা-পয়সা কেমন আছে সেটা দেখেন না।

চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আবু তাহের। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ট্যাক্স লইয়ার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট রমিজউদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ মুছা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিমউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দীন চৌধুরি রাজ্জাক, আয়কর এপিলিয়েট ট্রাইব্যুনালের সদস্য মোহাম্মদ শাহীন আক্তার হোসেন, কর অঞ্চল-১’র কর কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, কর অঞ্চল-২’র কর কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান, কর কমিশনার (আপিল) শামিনা ইসলাম, কর অঞ্চল-৪’র কমিশনার আয়েশা সিদ্দিকা শেলী, কর অঞ্চল-৩’র কমিশনার মোহাম্মদ মঞ্জুর আলম প্রমুখ।

Explore More Districts