নেত্রকোনার কলমাকান্দায় দীর্ঘ ১২ বছর ধরে শিকলবন্দী হয়ে জীবন কাটাচ্ছে আবু সাঈদ (২৫) বছর বয়সী এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। সে উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের মধুকুড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে।
পরিবারের সাথে কথা বলে যানা যায়, সাঈদ কিছুটা হাবাগোবা ছিল। শিশুকালে স্কুলে যাওয়া ও বাবার কাজে সহযোগিতা করতো। প্রায় ১৩ বছর বয়স হওয়ার পর থেকেই তার মধ্যে মানসিক কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়।
চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ডাক্তার ও কবিরাজের শরণাপন্ন হলেও তার আচরণের কোনো পরিবর্তন হয়নি। মুক্ত থাকলে হারানোর ভয় ও অন্যের ক্ষতি করতে পারেন, এমন আশংকায় সাঈদকে এভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে বলে জানান তার পরিবার।
সাঈদকে রাতে বাড়ির বারান্দায় এবং সকালে বাড়ির পাশের একটি আমগাছের সঙ্গে পায়ে শিকল পরিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। সেখানেই খাবার দেওয়া হয় তাকে। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে চলছে সাঈদের শিকলবন্দী জীবন।
সাঈদের মা সেলিনা খাতুন (৪৩) আমরা গরীব বিধায় ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে চোখের সামনেই প্রতিনিয়ত সাঈদের বন্দীদশা দেখতে হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার মহোদয়ের কাছ থেকে চিকিৎসার জন্য ২০ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছি। এদিকে ঘরের অবস্থাও নাজুক। অল্প বৃষ্টিতেই ঘর পানিতে ভেসে যায়। একটি সরকারি ঘরের জন্য এমপি’র সুপারিশসহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে বার বার যোগাযোগ করেও ভাগ্যে ঘর জোটেনি। আমি ভাঙা ঘরে ছেলে মেয়েদের নিয়ে অতিকষ্টে এভাবেই দিন পার করছি।
এবিষয়টি অবহিত করলে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ সোহেল রানা বলেন, সাঈদের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে তার সুচিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।